মঙ্গলবার ● ১৯ জুলাই ২০২২

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে বড় পদক্ষেপ বাংলাদেশে, এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিং, সপ্তাহে একদিন পাম্প বন্ধ

Home Page » জাতীয় » বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে বড় পদক্ষেপ বাংলাদেশে, এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিং, সপ্তাহে একদিন পাম্প বন্ধ
মঙ্গলবার ● ১৯ জুলাই ২০২২


 ফাইল ছবি

বঙ্গনিউজ : মঙ্গলবার থেকে সারাদেশে এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিং করা বা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে সপ্তাহে একদিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে জ্বালানি সাশ্রয়ে লক্ষ্যে বাংলাদেশের সরকার এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে।

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এসব সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেছেন, জ্বালানি তেলে লোকসান কমাতে এসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

যেসব এলাকায় লোডশেডিং থাকবে, তা আগেভাগে জানিয়ে দেয়া হবে এবং দিনে অন্তত এক থেকে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

মি. চৌধুরী জানান, জ্বালানিখাতে লোকসান কমাতে ডিজেল-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো সোমবার অর্থাৎ আজ থেকেই বন্ধ রাখা হবে।

এর আগে গ্যাস সংকটের কারণে লোডশেডিং বেড়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিল সরকার। তবে এসব ব্যবস্থা সাময়িক বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বিদ্যুৎ খাতের সাফল্য কি সরকারের জন্য ‘বোঝা’ হয়ে উঠেছে?
বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা বেড়ে গেলেও ভাড়া-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কেন?
‘বিদ্যুৎ ঘাটতির দেশ থেকে বিদ্যুৎ উদ্বৃত্তের দেশ’
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের ধারণা, এখন এক থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি হবে। এটা আমরা ফিডার ভিত্তিক লোডশেডিং করে দেবো। এতে দিনে এক থেকে দেড় ঘণ্টা, কোথাও কোথাও দুই ঘণ্টাও লোডশেডিং হতে পারে। কিন্তু দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।”

বিকালে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ একটি সংবাদ সম্মেলনে মসজিদ, মন্দির বা উপাসনালয়গুলোতেও বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবার কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, মসজিদে নামাজের সময় ছাড়া অন্য সময় যেন যত্রতত্র এসি ব্যবহার না করা হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি বলেছেন, মঙ্গলবার থেকে দেশের সব এলাকায় এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং দেয়া হবে। এক সপ্তাহ পরীক্ষামূলকভাবে এই ব্যবস্থা দেখার পর পরবর্তীতে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং দেয়া হতে পারে।

পাওয়ার সেলের তথ্য বলছে, গত ১৬ই এপ্রিল বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুতের উৎপাদন হয়েছিল।
গ্যাসের স্বল্পতার কারণে গ্যাসনির্ভর বেশ কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ থাকায় ঈদুল আযহার আগে থেকেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহে রাশ টানা হয়েছিলচলছিল। সেই সঙ্গে বিশ্বে জ্বালানি তেল এবং তরলীকৃত গ্যাস বা এলএনজির দাম বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে আমদানি কমেছে।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্ববাজারে দাম চড়া হওয়ায় খোলাবাজার বা স্পট মার্কেট থেকে বাংলাদেশ এলএনজি কেনা বন্ধ রাখে।

বৃহত্তম পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে যে পাঁচটি তথ্য জেনে রাখতে পারেন
রাত আটটায় দোকান বন্ধ করলে কী পরিমাণ বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে?
বাংলাদেশে বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা, চ্যালেঞ্জ কোথায়?
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মার্কিন ডলারের দাম বৃদ্ধি। বাংলাদেশে চাহিদার তুলনায় যোগান কমে যাওয়ার কারণে বাজারে ডলারের সংকট দেখা যাচ্ছে, ফলে আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় এই বিদেশী মুদ্রার দাম ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।

এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সরকারের তরফ থেকে জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে এসব সিদ্ধান্ত এলো।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বিশ্বে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বাড়ায় বিভিন্ন দেশ সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য অনেক রকমের পদক্ষেপ নিয়েছে। “আমরাও মনে করি আমাদের কিছুটা হলেও সাশ্রয়ী হওয়া দরকার”।

সকল দোকানপাট রাত আটটার মধ্য বন্ধ করার নির্দেশনার কথা জুন মাসেই আবারো স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

মাত্র এক বছর আগেই ২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতার কথা মহাসমারোহে ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশের সরকার। সেই উপলক্ষকে উদযাপনের জন্য বড় আয়োজনও করা হয়েছিল সেই সময়।

বাংলাদেশ সময়: ১১:৩৫:৫৫ ● ৫৫১ বার পঠিত