শুক্রবার ● ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

তিন মাসে ইসলামী ব্যাংকগুলোর আমানত কমেছে ১১ হাজার কোটি

Home Page » অর্থ ও বানিজ্য » তিন মাসে ইসলামী ব্যাংকগুলোর আমানত কমেছে ১১ হাজার কোটি
শুক্রবার ● ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩


ফাইল ছবি- বাংলাদেশ ব্যাংক

বঙ্গ-নিউজ: তিন মাসে দেশের ইসলামী ব্যাংকগুলোতে আমানতের পরিমাণ ১১ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা কমেছে। ২০২২ সালের শেষ প্রান্তিকে এসব ব্যাংকে আমানত প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যা আট বছরে প্রথম। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে বিষয়টি উঠে এসেছে।

ঋণ অনিয়মের জেরে ইসলামী ঘরানার ব্যাংকগুলোর প্রতি গ্রাহকদের আস্থার অভাব ফুটে উঠেছে আমানত কমার বিষয়টিতে। গত আট বছরে আর কোনো প্রান্তিকে এসব ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ কমার রেকর্ড নেই।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, ২০২২ সালের শেষে ইসলামী ব্যাংকগুলোতে আমানতের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৯ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকা। বিগত বছরের তৃতীয় প্রান্তিক শেষে সেপ্টেম্বরে এসব ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ২১ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিক পর্যালোচনা অনুযায়ী, বিগত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে ইসলামী ব্যাংকগুলোতে আমানতের পরিমাণ ২ দশমিক ৭১ শতাংশ বা ১১ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা কমেছে।

দেখা গেছে, পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংকগুলো তুলনামূলক বেশি আমানত হারিয়েছে। বর্তমানে দেশে এমন ব্যাংক রয়েছে ১০টি। সে তুলনায় প্রথাগত ঘরানার যেসব ব্যাংকে ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রম রয়েছে, তাদের আমানত প্রবাহ ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়েছে।

প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংকগুলোতে আমানতের পরিমাণ সেপ্টেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে ১১ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা কমেছে। সেপ্টেম্বরে এসব ব্যাংকে সম্মিলিতভাবে আমানতের মোট পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৯১ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। ডিসেম্বর নাগাদ মোট আমানত ৩ শতাংশ কমে হয় ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এ প্রতিবেদন এমন সময় প্রকাশ হলো যখন আমানত ও বিনিয়োগের হিসাবে দেশের বৃহত্তম বেসরকারি ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল) আমানতকারীদের অর্থ উত্তোলনের চাপে তারল্য সংকটে ভূগছে। বেশ কয়েকটি সন্দেহভাজন ঋণ কেলেংকারির খবর প্রকাশের জেরে আস্থার সংকটে পড়েছে ব্যাংকটি।

তারল্য সংকট সামাল দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকগুলোতে তহবিল সঞ্চার করেছে। ২৯ ডিসেম্বর নাগাদ বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ৮ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে। শরীয়াহভিত্তিক অন্য চারটি ব্যাংক- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক নিয়েছে ৬ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা।

ইসলামী ব্যাংকগুলোতে আমানত কমার বিষয়টিকে বিশ্লেষকরা আস্থার সংকট বলেই মনে করছেন। এ বিষয়ে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, গ্রাহকরা সাবধানতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আমানত উঠিয়ে নিয়েছেন। এখনও এসব ব্যাংককে ঘিরে আস্থার সংকট রয়ে গেছে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক শাহ মো. আহসান হাবীব বলেন, বহু বছর ধরে শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো আমানত সংগ্রহের ক্ষেত্রে প্রথাগত ব্যাংকের তুলনায় এগিয়ে ছিল। এখন মনে হচ্ছে ঋণ অনিয়মের খবর বেরোনোর পর এসব ব্যাংকের প্রতি এক শ্রেণির গ্রাহকের আস্থায় চিড় ধরেছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০:২৮:৪৬ ● ৪০০ বার পঠিত