
শনিবার ● ১৭ মে ২০২৫
রাঙামাটিতে ‘মার্চ ফর ফ্যাসিবাদী আইকন’ ব্যানারে বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য ভেঙেছে
Home Page » জাতীয় » রাঙামাটিতে ‘মার্চ ফর ফ্যাসিবাদী আইকন’ ব্যানারে বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য ভেঙেছেবঙ্গনিউজ: রাঙামাটি শহরের ভেদভেদী এলাকায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বিশাল ভাস্কর্য ভেঙে ফেলেছে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতা’ নামে একটি প্ল্যাটফর্মের সদস্যরা। শুক্রবার (১৬ মে) বিকেল থেকে তারা এই ভাঙচুরের কাজ শুরু করে। প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ভাস্কর্যটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জেলা নির্বাচন অফিসের পাশে সার্ভার স্টেশন এলাকায় অবস্থিত ছিল।
জানা যায়, বিকেল ৩টায় ভেদভেদী বাজার থেকে ‘মার্চ ফর ফ্যাসিবাদী আইকন’ ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি সার্ভার স্টেশনের সামনে গিয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এসময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে একপর্যায়ে তারা নিজেরাই ভাস্কর্যটি ভাঙতে শুরু করেন।
এর আগে, মঙ্গলবার (১৩ মে) এক বিক্ষোভ মিছিল থেকে ভাস্কর্যটি অপসারণের জন্য ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছিল প্ল্যাটফর্মটি। পরবর্তীতে ১৫ মে রাতে রাঙামাটি প্রেস ক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে শুক্রবার ‘মার্চ ফর ফ্যাসিবাদী আইকন’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় এবং প্রশাসনকে ১২ ঘণ্টার চূড়ান্ত আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। আন্দোলনকারীদের ভাষ্যমতে, শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিকেল ৩টা থেকে তারা কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
আন্দোলনকারীদের দাবি, দীর্ঘ ৯ মাস ধরে তারা ভাস্কর্যটি অপসারণের জন্য প্রশাসনকে বারবার অনুরোধ করলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই তারা এটিকে ‘ফ্যাসিবাদের প্রতীক’ আখ্যা দিয়ে নিজেরাই ভাঙার সিদ্ধান্ত নেন।
রাঙামাটি সরকারি কলেজের গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক মো. ইমাম হোসাইন বলেন, ‘সারা দেশে কোথাও এই ধরনের ফ্যাসিবাদী মূর্তি বা ভাস্কর্য অবশিষ্ট নেই, শুধু রাঙামাটিতেই রয়ে গেছে। দীর্ঘ ৯ মাস ধরে বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও প্রশাসন আমাদের দাবিকে গুরুত্ব দেয়নি। মঙ্গলবারও আমরা ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। কিন্তু তাতেও সাড়া পাইনি। তাই রাঙামাটির আপামর ছাত্র-জনতা নিজেরাই এই ভাস্কর্য অপসারণের কাজ শুরু করেছে।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির রাঙামাটি জেলার সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান রোমান বলেন, ‘আমরা বারবার চেয়েছি প্রশাসন নিজে থেকে এই ভাস্কর্য অপসারণ করুক। কিন্তু তারা নীরব থেকেছে। আজ আমরা নিজেরাই কলঙ্কমুক্ত করার কাজ হাতে নিয়েছি।’
এ বিষয়ে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর কয়েকটি পক্ষের আপত্তি থাকায় ভাস্কর্যটি ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রেখেছিলাম। আন্দোলনকারীরা আমাকে স্মারকলিপি দিয়ে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিল। আমি তাদের জানাই, মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া এটি ভাঙা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আবার দুর্নীতি দমন কমিশনে এ ভাস্কর্য নিয়ে মামলা চলমান থাকায় আমি নিজেও এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে পারিনি। এখন তারা নিজেরাই ভেঙেছে, এখানে আমাদের কিছু করার নেই।’
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অর্থায়নে ও ব্যবস্থাপনায় প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এটি জেলা প্রশাসন ভবনের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি চত্বরে স্থাপন করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ২০:২৯:৪৪ ● ১৫০ বার পঠিত