
রবিবার ● ১ জুন ২০২৫
আকাশ মাহমুদ- এর কবিতা ‘বনলতা সেন ও শান্তির সন্ধানে ‘
Home Page » সাহিত্য » আকাশ মাহমুদ- এর কবিতা ‘বনলতা সেন ও শান্তির সন্ধানে ‘অনন্তকাল ধরে এ পৃথিবীর জটিলতম পথে পথ হাঁটিতেছেন হতাশা নিয়ে এক কবি,
মেঘ বৃষ্টির খেলা তার অন্তর জুড়ে কোনদিন উদিত হবে কি রবি?
হ্যাঁ, আমিই সেই কবি- এক ক্লান্ত শ্রান্ত পথিক আমি,
কে তুমি, বনলতা সেন? হঠাৎ কেনইবা এলে আমার জীবনে হে অপরূপা তুমি?
কথার ব্যথা, অবহেলা, অপমান আর নিঠুর পৃথিবীর যত জটিলতা,
বনলতা সেন, তুমি কি জানো- দিশাহীন এ পথিকের বুক ভরা এক সমুদ্র ব্যথা?
এক চিলতে সুখ আর নিরাপদ আশ্রয় এ কবির মন ক্ষণে ক্ষণে চাই,
মায়াময়ী তুমি- তাইতো কবির মন আজ উচাটন তোমার পানে ধায় তোমার নীড়েই ফিরে যাই।
শুধু আমি নয়- দেখবে তুমি বনলতা সেন- যুগে যুগে শত সহস্র প্রেমিকসত্ত্বা আমার আত্মায় ভর করে আসিবে ফিরে,
ক্ষণিক শান্তির তরে তোমার এই মায়াবী নীড়ে।
যাই বলো তোমরা মোরে- মোর কবিত্ব শান্তি, ভালোবাসা আর প্রেম খুঁজবেই,
হাজার প্রেমিকের অশান্ত মনে মন ভিজিয়ে বনলতা সেনের মুখোমুখি কবি একদিন বসবেই।
জীবনানন্দের মত অগণিত কবি ভালোবাসা, প্রেম আর শান্তি খুঁজেছেন শত প্রেমিকার অন্তরে,
সেই কবিদের মত আমিও শান্তি খুঁজবো পথে প্রান্তরে, সাগর তীরে অথবা বন্দরে বন্দরে।
হঠাৎ দেখলেন কবি বালুকা বেলায় গোধূলিলগ্নে এক কালোকেশী সাগর কন্যা,
উথলি উঠিল মনে তার আবেগ, বাসনা, ভালোবাসা আর প্রেমের বন্যা।
কবি কহিলেন: বনলতা সেন, সাত সমুদ্র তের নদী পাড়ি দিয়ে অবশেষে এলাম আমি তোমারি দেশে,
সমাজের চোখ রাঙানিতে মানুষ রূপে আসতে পারিনি- তাই এলাম আমি শঙ্খচিল আর শালিকের বেশে।
সাগরের উত্তাল বুকে দখিনা বাতাসে উড়িছে শঙ্খচিল,
শঙ্খচিলকে বুকে উড়িয়ে দক্ষিণা বাতাসের সেকি অন্তরঙ্গতা আর অপূর্ব মিল!
এ মিল দেখিবে অপলোকে কবি,
মনের রঙে আঁকিবেন বনলতা সেনের এক অপরূপ ছবি।
বিস্তীর্ণ সমুদ্র সৈকতে বনলতা সেন, পিছনে উত্তাল সমুদ্র আর ইজেলে কবি,
এবার আঁকবেন তিনি মনের তুলিতে এক ছবি।
ছবি আঁকিতে সাগরের ঢেউ, ঝিরিঝিরি বাতাস আর উদাস মন গড়িবে আবহ,
অনুভূতি জাগিবে যেন উত্তাল সমুদ্রের সুউচ্চ ঢেউয়ের চটুল প্রবাহ।
কবি করিবে স্বগতোক্তি- বনলতা সেন, তুমিই এলোকেশী সেই সাগর কন্যা,
তুমি অপরূপ তুমি সুন্দর তুমি অনন্যা।
শহরের ব্যস্ততা ছেড়ে চলে এসো তুমি এ সাগর কিনারে,
ইট, কাঠ, লোহা আর পাথরের নিঠুর শহরে যদি কখনো মনে পড়ে আমারে।
চোখে উদাস দৃষ্টি নিয়ে পা ছড়িয়ে বস তুমি সাগর কিনারে,
কল্পনায় আর অনুভবে যদি পেতে চাও তুমি হতদরিদ্র আমারে।
মনে রেখো- ছলনার পৃথিবীতে আমিই তোমার অনাবিল বিশ্বাস,
এসেছি তোমারই দুয়ারে হয়ে আজ দখিনা বাতাস,
তোমারই বুকে ছড়াবো আমি শত বিশ্বাস শত আশ্বাস।
সাগরের বুক ছুঁয়ে আমি নাচিব চটুল,
উড়াবো তোমার ঘন কালো চুল,
স্বপ্নে বিভোর পুলকিত তুমি পাচ্ছো প্রতিমুহূর্তে আনন্দ বিপুল।
ফুরফুরে বাতাস- ফুরফুরে তোমার মন,
সাগরের ঢেউ দুলছে, তোমার মন নাচছে- তুলছে আনন্দের মাতন।
দখিনা বাতাসে দুলছে মোর সোনার তরী,
এ তরী নিতে এসেছে বনলতা সেন শুধুই তোমারি।
ঝিরিঝিরি বাতাস লাগিছে গালে,
আলুথালু তুমি- দৃষ্টি গেলো আটকে- ছবি আঁকা আমি গেলাম ভুলে।
দখিনা বাতাসে শিহরিত তুমি,
নয়ন মেলে অপলোকে তোমাকে দেখছি আমি।
পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে ক্লান্ত শ্রান্ত আমি হাঁটিতেছি এ পৃথিবীর পথে,
ক্ষণিক শান্তির আশায় ঘুরি হেথায় হোথায় চলি জীবনের রথে।
পেলাম অবশেষে এই উত্তাল জীবন সমুদ্রের কিনারে,
কালোকেশী এলোকেশী প্রেমময়ী তোমারে।
তুমিই আমার সেই তুমি,
যাকে এতদিন খুঁজছি আমি।
হ্যাঁ, তুমিই আমার বনলতা সেন- পাখির নীড়ের মত সুরক্ষিত আশ্রয় আর মায়াবী তোমার চোখ,
কবি আকাশ মাহমুদ আর দৃষ্টি ফেরাবেনা- চেয়ে রবে অপলোক,
এ কবির রাজ্য থেকে আজ উধাও হয়ে যাবে সব শোক,
একি বিস্ময়! একি মুগ্ধতা! একি শান্তি! কবির সুখময় মনের যাত্রা শুরু হোক সূদুর সেই অনন্তলোক।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৪৯:১৮ ● ২৮৬ বার পঠিত