
শনিবার ● ৪ অক্টোবর ২০২৫
আবারও অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ , ১১ জনের শরীরে এই ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে
Home Page » জাতীয় » আবারও অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ , ১১ জনের শরীরে এই ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছেবঙ্গনিউজ: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় অন্তত ১১ জনে শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। এটি একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ, যা সাধারণত আক্রান্ত পশু থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়।
রবেয়া ক্লিনিক ও নার্সিং হোমে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মঞ্জুরুল করিমের কাছে গত রাতেই সাত জন রোগী এ উপসর্গ নিয়ে আসেন হাসপাতালের স্টাফ সাইদুর রহমান আজ বলেন, একই উপজেলায় আরও চারজনের মধ্যে আগে একই ধরনের উপসর্গ দেখা যায়। এতে সন্দেহভাজন রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১১ জনে পৌঁছেছে।
সুন্দরগঞ্জের বেলকা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হাফিজার রহমান গণমাধ্যমকে জানান, সংক্রমণ সম্ভবত ২৯ সেপ্টেম্বর একটি অসুস্থ গরু হত্যার পর শুরু হয়। কসাই ও মাংস নিয়ে কাজ করা ১১ জনের হাতে, মুখ, নাক এবং মুখের আশেপাশে ফোস্কা ও ত্বকের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত চারজন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এই নতুন ঘটনাগুলোর সঙ্গে, এই বছর বাংলাদেশে অ্যানথ্রাক্সের ২২টি সংক্রমণ রিপোর্ট হয়েছে। এর আগে ১ অক্টোবর রংপুরের তিন উপজেলায় ১১ জন অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হন।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্যমতে, অ্যানথ্রাক্স বাংলাদেশের মানুষের ও পশুপাখির জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি করছে, বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে। এটি প্রধানত ঘাসখাদ্য খাওয়া প্রাণীদের রোগ, যা প্রাণীর মৃত্যু ঘটাতে পারে এবং মানুষের সংস্পর্শে আসলে সংক্রমণ ছড়ায়। সংক্রমণ হয় আক্রান্ত পশুর সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শ, ছাল বা হাড়ে সংস্পর্শ, কাঁচা বা অপরিষ্কৃত মাংস খাওয়া অথবা স্পোর শ্বাসের মাধ্যমে। ইনকিউবেশন পিরিয়ড ১-২০ দিন পর্যন্ত হতে পারে।
আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. আহমেদ নওশের আলম বলেন, অসুস্থ গরু বা ছাগল হত্যার মাধ্যমে অ্যানথ্রাক্স ছড়ায়। আমাদের পরামর্শ, অসুস্থ পশু হত্যা করা বা তাদের সংস্পর্শে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। আতঙ্কিত হবার কিছু নেই, সতর্ক থাকাই যথেষ্ট
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও আইইডিসিআরের সাবেক উপদেষ্টা ড. এম. মুশতাক হোসেন বলেন, অ্যানথ্রাক্স থেকে নিরাপদ থাকতে অসুস্থ গবাদিপশু চিকিৎসা নেওয়া উচিত এবং মারা গেলে গভীরভাবে পুঁতে দিতে হবে। মৃত পশু খাল, জলাশয় বা নদের মধ্যে ফেলার কোনো সুযোগ নেই।
অ্যানথ্রাক্সে উপসর্গের মধ্যে জ্বর, গোলাকার ত্বকের ক্ষত বা আলসার, কখনো কখনো চুলকানি অন্তর্ভুক্ত। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিবায়োটিক ও লোশন দিয়ে চিকিৎসা সম্ভব। তাই বিশেষজ্ঞরা আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
আইইডিসিআর জানিয়েছে, অ্যানথ্রাক্স বাংলাদেশে এন্ডেমিক রোগ, যা প্রতি বছর স্পোর্যাডিক আকারে দেখা যায়। ২০১৯ সালে আইইডিসিআর আগের সংক্রমণের ভিত্তিতে সিরাজগঞ্জ, পাবনা, মেহেরপুর, টাঙ্গাইল ও রাজশাহী জেলার নয়টি উপজেলায় সক্রিয় অ্যানথ্রাক্স নজরদারি শুরু করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৪৭:৫৪ ● ৬৫ বার পঠিত