মঙ্গলবার ● ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের বিনিয়োগ এখন সময়ের দাবি

Home Page » প্রথমপাতা » দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের বিনিয়োগ এখন সময়ের দাবি
মঙ্গলবার ● ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫


রাজধানীর এক হোটেল প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ফাইল ছবি

বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় দেশ যে অর্থনৈতিক সংকট ছিল। সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে গত দেড় বছরে রেমিট্যান্স প্রবাহের ধারাবাহিকতা বড় সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। উপসাগরীয় দেশগুলোতে কর্মরত শ্রমজীবী প্রবাসীদের অক্লান্ত পরিশ্রমেই দেশের অর্থনীতি আজ অনেকটা স্থিতিশীল। তবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকা শুধু রেমিট্যান্স পাঠানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়। বিশেষ করে ব্যবসা ও শিল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রবাসীরা দেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারেন। যা দীর্ঘমেয়াদে দেশের জন্য আরও বেশি সুফল বয়ে আনবে।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বনানীর হোটেল শেরাটনের বলরুমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে আয়োজিত ‘এনআরবি গ্লোবাল কনভেনশন–২০২৫’–এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘এনআরবি ওয়ার্ল্ড’, ‘এনআরবি ফ্যামিলি সাপোর্ট’ এবং ‘এনআরবি ক্লাব লিমিটেড’ যৌথভাবে এর আয়োজন করেন।

ভারতের উদাহরণ দিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, প্রবাসী নাগরিকদের দক্ষতা ও বৈশ্বিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে দেশটি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছে। বাংলাদেশেও এখন প্রবাসীদের মধ্যে এমন একটি ন্যূনতম ‘ক্রিটিক্যাল মাস’ তৈরি হয়েছে। যারা চাইলে দেশের উন্নয়নে অনুঘটকের ভূমিকা রাখতে পারেন।

দেশের তরুণদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের অভাবেই অনেক তরুণ জীবন ঝুঁকিতে ফেলে অবৈধ পথে ইউরোপমুখী হচ্ছে। প্রবাসীদের বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশে শিল্প, প্রযুক্তি ও সেবাখাতে সুযোগ তৈরি হলে এই প্রবণতা কমবে।

বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের কম পারিশ্রমিক পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে তৌহিদ হোসেন বলেন, একই কাজ করেও বাংলাদেশি শ্রমিকরা অনেক ক্ষেত্রে ভারতীয় শ্রমিকদের তুলনায় তিন থেকে চার গুণ কম মজুরি পান। এর মূল কারণ দক্ষতা ও শিক্ষার ঘাটতি।

তিনি জাপানের শ্রমবাজারের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে বলেন, ভাষা ও দক্ষতা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সেখানে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ বহুগুণ বাড়ানো সম্ভব।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সরকার ইতোমধ্যে কিছু সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে এবং ভবিষ্যৎ সরকারের জন্য সংস্কারের পথ তৈরি করে গেছে। নীতিগত ধারাবাহিকতা ও বিনিয়োগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগ উভয়ই বাড়বে।

তিনি বলেন, অবাস্তব স্বপ্ন নয়, বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ করেই বাংলাদেশকে এগোতে হবে। আঞ্চলিক দেশগুলোর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে প্রবাসীদের সম্পৃক্ত করলে দেশের অর্থনীতি আরও শক্ত ভিত পাবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর পল ফ্রস্ট, এনআরবি ওয়ার্ল্ডের সভাপতি আজিজ আহমেদ, আমেরিকা-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি গিয়াস আহমেদ, গ্লোবাল এনআরবি চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক হেমি হোসেন, অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ রুবেল, জাপান-বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা. শেখ আলিমুজ্জামান, দুবাইত রিয়েল এস্টেটের সিইও মমিনুল হক প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২১:২০:৩৩ ● ২৮ বার পঠিত