বিপিসিকে তেল দেবে না বিদেশি কোম্পানিগুলো বকেয়া না পেলে

Home Page » অর্থ ও বানিজ্য » বিপিসিকে তেল দেবে না বিদেশি কোম্পানিগুলো বকেয়া না পেলে
বৃহস্পতিবার ● ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩


বিপিসির দেনা ৪ হাজার ৪৮১ কোটি টাকার বেশি

বঙ্গ-নিউজঃ    ডলার সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। ডলারের অভাবে বকেয়া পরিশোধ করতে না পারায় চুক্তি অনুযায়ী শিডিউলে থাকা তেল দিতে রাজি হচ্ছে না বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো। এরই মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠান সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বকেয়া পরিশোধ ছাড়া তারা তেল দেবে না। ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিপিসির দেনা দাঁড়িয়েছে ৪০৭ দশমিক ৪২ মিলিয়ন ডলার! প্রতি ডলার ১১০ টাকা হিসাবে যা ৪ হাজার ৪৮১ কোটি টাকার বেশি!

এমন পরিস্থিতিতে ডলারের জোগান নিশ্চিত করতে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগে চিঠি দিয়েছে বিপিসি। তা না হলে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি তেল সরবরাহ ব্যাহত হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। গত সোমবার জরুরি এই চিঠি দেন বিপিসির চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ। এতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে তেল আমদানির বিপরীতে বকেয়ার চিত্র তুলে ধরা হয়।

বিপিসির পরিচালক (অর্থ) কাজী মুহাম্মদ মুজাম্মেল হক এ বিষয়ে  বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি বিপিসির একান্তই অফিসিয়াল। এ নিয়ে কিছু বললে মন্ত্রণালয়ই বলবে।’ তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিপিসির এক কর্মকর্তা বলেন, বিপিসির অর্থ সংকট নেই, সংকট সেই ডলারের। আর তেলের দাম পরিশোধ করতে হয় ডলারে। তাই ডলারের জোগান চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তেল সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোর বকেয়া পরিশোধ সম্ভব না হলে দেশ জ্বালানি তেলের সরবরাহ  সংকটে   পড়তে পারে। প্রতি মাসে ১৭ থেকে ১৮টি চালানে ৫ লাখ টন পরিশোধিত ও ১ লাখ টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করে বিপিসি।

বিপিসির চিঠিতে বলা হয়, ডলার সংকটে বিপিসির বকেয়া দিন দিন বাড়ছে। ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেনা দাঁড়িয়েছে ৪০৭ দশমিক ৪২ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ১৩ সেপ্টেম্বর তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভিটল ও বিএসপি তাদের পাওনা পরিশোধে অনুরোধ জানিয়ে বিপিসিকে চিঠি দিয়েছে। ভিটল ও বিএসপি সেপ্টেম্বরের বাকি সময় ও অক্টোবরে যদি কার্গো সরবরাহ না করে, তাহলে নিরবচ্ছিন্ন তেল সরবরাহ সম্ভব হবে না।

বিপিসির একটি সূত্র জানায়, ভিটলের চিঠিতে বলা হয়েছে, ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিপিসির কাছে তাদের পাওনা ১৯ কোটি ৮৮ লাখ ৪৬ হাজার মার্কিন ডলার। এই বকেয়ার কারণে বিপিসি থেকে ইস্যু করা এলসি তারা নিশ্চিত করবে না। জটিলতা এড়াতে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ধাপে ধাপে হলেও ১১ কোটি ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ডলার পরিশোধের অনুরোধ জানায় সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠান ভিটল। বকেয়া পরিশোধ না হলে ‘বিলম্বজনিত সুদ’ আরোপ করার কথাও চিঠিতে উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি অক্টোবরের জন্য বিপিসির চাওয়া সব কার্গো বাতিল এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে।

আর ইন্দোনেশিয়ার প্রতিষ্ঠান বিএসপি তাদের চিঠিতে উল্লেখ করে, ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিপিসির কাছে তাদের পাওনা ৭ কোটি ১ লাখ ২৭ হাজার মার্কিন ডলার। এই বকেয়া ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ধাপে ধাপে পরিশোধের করতে বলে তারা। অন্যথায় সেপ্টেম্বরের বাকি সব কার্গো বাতিল হবে বলে জানায়।

প্রতি মাসে তেলের সম্ভাব্য চাহিদা অনুযায়ী আমদানি সূচি নির্ধারণ করে বিপিসি। সে অনুযায়ী অন্তত ৩০ দিন আগে তেল সরবরাহকারী সব প্রতিষ্ঠানে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়। চলতি মাসের বাকি সময়ে বিএসপি ৫০ হাজার টন ফার্নেস অয়েল সরবরাহের কথা রয়েছে। আর অক্টোবরের প্রস্তাবিত আমদানি সূচি অনুযায়ী দুই দফায় প্রতিষ্ঠানটি ৮০ হাজার টন তেল সরবরাহ করার কথা। অক্টোবরে ভিটল পাঁচটি পার্সেলে সরবরাহ করার কথা ১ লাখ ১৫ হাজার টন ডিজেল ও ৩৫ হাজার টন জেড ফুয়েল।

বাংলাদেশ সময়: ১০:৩৭:০৮ ● ১৫৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ