বৃহস্পতিবার ● ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
কাল সকালের মধ্যে খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হবে
Home Page » জাতীয় » কাল সকালের মধ্যে খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হবে![]()
আজ বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কিংবা আগামীকাল শুক্রবার সকালের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারন খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হবে। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলটির স্থায়ী কমিটি সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল গেটের সামনে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।
এদিকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার সমকালকে জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা করতে পারেন তিনি। তাঁর সঙ্গে থাকবেন ৬ চিকিৎসকসহ ১৪ জন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় এরই মধ্যই চীন ও যুক্তরাজ্য থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দুটি দল ঢাকায় এসে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন। বুধবার রাতে চীনা চিকিৎসকদের দ্বিতীয় দল হাসপাতালে পৌঁছে। চার সদস্যের বিশেষজ্ঞ দলটি রাতেই মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক জানান, ফুসফুসে স্বাভাবিকভাবে বাতাস চলাচল করানোর জন্য মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশন রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বুধবার বিকেলে তাঁকে কিডনি কার্যক্রম সচল রাখতে ডায়ালাইসিস করা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সন্ধ্যা ৭টার পরই তিনি হাসপাতালে পৌঁছান। তাঁকে স্বাগত জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় সঙ্গে ছিলেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) টানা এক সপ্তাহ ধরে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন। তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য বিশিষ্ট হেমাটোলজিস্ট অধ্যাপক নুরুদ্দীন আহমদ সমকালকে বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের অবস্থা অপরিবর্তিত। আগের মতোই আছেন। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে কিনা– জানতে চাইলে তিনি বলেন– না, আগের মতোই। উন্নতি বা অবনতি কোনোটাই বলা যাচ্ছে না।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে বুধবার দুপুরে হাসপাতালে যান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। পরে তাঁর একজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা জানান, উপদেষ্টা সিসিইউর ভেতরে গিয়েছিলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন সাড়া দিয়েছেন। ইশারায় সালামের জবাব দিয়েছেন।
মেডিকেল বোর্ডের আরেকজন চিকিৎসক বলেন, ম্যাডামের অবস্থা স্থিতিশীল। কিছুটা রেসপন্স করছেন। চিকিৎসক ও পরিবারের সদস্যরা ডাক দিলে কিছুটা সাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে এটাকে আশানুরূপ উন্নতি বলা যাচ্ছে না। তাঁর স্বাস্থ্যের বিভিন্ন প্যারামিটার ওঠানামা করছে।
তিনি জানান, প্রতি রাতেই ঘণ্টা দেড়েক বৈঠক করে বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিকেল বোর্ড। যেখানে দেশি-বিদেশি অন্তত দেড় ডজন চিকিৎসক যুক্ত হন। লন্ডন ক্লিনিকের বিখ্যাত চিকিৎসকরাও যুক্ত হন, যাদের অধীনে খালেদা জিয়া লন্ডনে মাসব্যাপী চিকিৎসা নিয়েছেন। ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকেন ছেলে তারেক রহমান ও পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান।
বৈঠকের পর নতুন করে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরীক্ষার রিপোর্ট পেলে চিকিৎসায় পরিবর্তন আনা হয়। এভাবেই চলছে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা। আশানুরূপ উন্নতি না হলে বিদেশে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হবে না।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সহায়তায় যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রিচার্ড বিল ঢাকায় এসেছেন। বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ এ চিকিৎসক হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান বলে জানা গেছেন। দুপুরে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে যান।
বিএনপি চেয়ারপারসন স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গত ২৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। সেদিন রাতে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে তাঁকে ভর্তি রাখা হয়। সেই থেকে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন। ২৭ নভেম্বর তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হলে সিসিইউতে চিকিৎসা দিচ্ছে মেডিকেল বোর্ড। একই সঙ্গে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চলছে তাঁর চিকিৎসা।
এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে চীনের ১০ সদস্যের একটি চিকিৎসক টিমও কাজ করছে।
উন্নত চিকিৎসার জন্য এর আগে গত জানুয়ারিতে লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে প্রথমে হাসপাতালে, পরে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিয়েছিলেন তিনি। প্রায় চার মাস লন্ডনে অবস্থানের পর গত ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:২৫:৪০ ● ৪ বার পঠিত