সোমবার ● ২২ ডিসেম্বর ২০২৫

রঙলেপা- ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরেঃ পর্ব-৬ স্বপন চক্রবর্তী

Home Page » সাহিত্য » রঙলেপা- ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরেঃ পর্ব-৬ স্বপন চক্রবর্তী
সোমবার ● ২২ ডিসেম্বর ২০২৫


স্বপন কুমার চক্রবর্তী
আমাদের গ্রুপে প্রকাশিত অনেকের লেখা নিয়ে বই প্রকাশিত হয়েছে। আরও হয়তো শীঘ্রই কিছু বই বাজারে আসবে। অনেকের লেখা বই আকারে আবির্ভাবের দ্বার প্রান্তে।
ইদানিং নিয়মিত লিখছেন অনেকে। অতিব বয়স্ক অগ্রণী ব্যাংকের প্রাক্তন সহকারী মহাব্যবস্থাপক, জনাব আমানূল ইসলাম। তিনি পাকিস্তান আমলে হাবিব ব্যাংকে চাকুরি করেছেন, যা পরবর্তিতে অগ্রণী ব্যাংক রূপে রুপান্তরিত হয়েছে। তিনি তাঁর স্মৃতিকথা মূলক লেখা ”মনের মুকুরে” লিখেছেন। সেটি বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে। জালাল স্যারসহ অনেকেই সাধ্য মতো উৎসাহ দিয়েছেন, সহযোগীতাও করেছেন। বইটিতে সেকালের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, চাকুরি জীবন, দুই বাংলার এমনকি পাকিস্তানের সার্বিক অবস্থা সহ অনেক কিছুই উঠে এসেছে। সুখপাঠ্য হয়েছে সেই লেখাটি। আমরাও অনেক কিছু জানতে পেরেছি লেখাটি থেকে। যেখানে পাবে ছাই, উড়াইয়া দেখ তাই। মোট কথা সব কিছু থেকেই কিছু না কিছু সংগ্রহ করা যায়, জানা যায়। একটি ফুল থেকে প্রজাপতি কিছুই নাকি সংগ্রহ করতে পারে না। শুধু শুধুই উড়ে বেড়ায়। মাকড়সা সেখান থেকে এক ধরনের আঠালো বিষ সংগ্রহ করে- যা তার শিকারের জন্য জাল বুনতে সহায়তা করে। আর একই ফুল থেকে মৌমাছি অতীব মূল্যবান পানীয়, মধু সংগ্রহ করে। মোট কথা, যে যা চায় সে তা খুঁজে পায়।কেহ ভুল খুঁজে বেড়ালে সে ভুল পায়, আর কেহ মুল্যবান বক্তব্য খুঁজে বেড়ালে মূল্যবান বক্তব্যই খুঁজে পায়। কথায় বলে- ভাবের অভাব হলে পরে কি হবে মাথা খুঁটে, মধু পোকায় মধু খুঁজে, মাছি মরে পচা চেটে।
অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি জনাব নূরুল আহসান এন্ড্রো তাঁর লিখা নিয়ে বই প্রকাশ করেছেন। বই মেলায় বইটির আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। সম্মানিত অনেক ব্যক্তি সেখানে উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠানটিকে রঙিন করেছেন। তিনি অল্প বিস্তর এখনও লিখছেন। আরও বই বাজারে আসবে শীঘ্রই। আমাদের আর একজন ডিজিএম আছেন। তিনিও অবসরে আছেন। অত্যন্ত শান্ত স্ভবাবের মানুষ। তবে কঠোর বাস্তব বাদী। তাঁর লেখা বই আছে একাধিক। তিনি হলেন জহুরুল আলম সিদ্দিকী। রঙলেপায় তিনিও বেশ মজার কাহিনী লিখে যাচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ তিনি খামুস হয়ে গেলেন। অতিবাস্তব বাদী হওয়ায় সম্ভবত তিনি বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন। প্রভাবশালীদের কাছে সত্যও পরাজিত হয়। সম্ভব হলে হয়তো জান্নাত কিনে নিতেও চেষ্টা করতো। এটা অবশ্য তাঁর কিছু লেখা স্টাডি করে অনুমান করেছি। তবে তিনি কৌশল অবলম্বন করতে পারতেন। অন্য কোন বিষয়ে লিখতে পারেন। আমার পরিবারের সাথে তাঁর পরিবারের একটা নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক যে, দীর্ঘ বিরতির কারণে এখন আর তেমন যোগাযোগ নেই। তিনি থাকেন রামপুরায় আর আমি বিপরীত দিকে সাভারে। আমরা আশা করবো যে, তিনি শীঘ্রই আবার কলম হাতে তুরে নিবেন।

রমজান আলী, ফজলে আজম, পরাগ রাজশাহী, মোয়াজ্জেম হোসেন সেলিম, মীর কামরুল ইসলাম বুলবুল লিখছেন নিয়মিত। মোঃ আজিজুল হক- যার গদ্য ও পদ্য দুই সমান ভাবে ভালো। খুব চমৎকার । এখনও লিখছেন। যদিও তাঁর লেখার প্রেরণা, কাব্যলক্ষী , চিত্তের সুখ ও মনের প্রফুল্লতা প্রদায়িণী ও সকল সৃষ্টিশীলকাজের উৎসাহদাত্রী, প্রেরণা দাত্রী ওনার স্ত্রী বছরকাল আগে প্রয়াত হয়েছেন। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার পরম শান্তি কামনা করছি। তিনি যেন জান্নাতবাসী হন এই প্রার্থনা জানাই। তাঁর লেখাও বই আকারে বাজারে এসেছে। আজিজপারভীন অধিকাংশ লিখেছেন ভ্রমণ কাহিনী। বই আকারে তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বহু দেশ ঘুরে এসে সচিত্র বিবরণ লিখেছেন ভ্রমণের উপর। আমরা যারা পদ্মানদী পার হয়ে ওপারে যাবার সামর্থ রাখিনা বিভিন্ন প্রতিকূল কারণে, তারা বিদেশে গিয়ে সেসব খুব উপভোগ করছেন এবং তাদের পোস্ট থেকে আমরাও বিদেশ সম্পর্কে অল্প-বিস্তর জানতে পারছি। ভ্রমণ পিপাসু আছেন আলতাফ হোসেন তালুকদার, আছেন আব্দুস সালাম। আভ্যন্তরিন ও আন্তর্জাতিক ভ্রমণের কাহিনী তারা লিখছেন। তাদের পোস্টও খুব চিত্তাকর্ষক হয়। তাদের চিত্রসহ বিভিন্ন দেশ-বিদেশের বিবরণ, খাদ্য সম্পর্কিত বিবরণ, দর্শনীয় স্থান, সে দেশের কৃষ্টি-কালচার-সংস্কৃতি এবং সহজে যাবার উপায় ও ভিসা-টিকিট সংগ্রহের পদ্ধতি, হোটেল সম্পর্কিত তথ্য ও সতর্কতা-সবই লিখে একটি একটি করে পূর্ণাঙ্গ সুন্দর ভ্রমণ কাহিনী দিয়েছেন আমাদের। জনাব সালাম হয়তো বই আকারে তার লেখা বাজারে নিয়ে আসবেন বলে আমরা আশা করছি। জনাব সালামের খুব সুন্দর একটি মানবিক গুণও রয়েছে। তিনি আমাদের মতো সামান্য পদধারী কর্মকর্তা ছিলেন। কিন্তু মনের দিক থেকে তাঁর মহানুভবতা আকাশ ছুঁয়া- যা বহু বড় বড় পদধারী অনেকের মাঝে দেখা যায় না। তিনি তাঁর বাসার উপরে খুব সুন্দর সুসজ্জিত কক্ষ করেছেন। সেটিকে প্রান্তিক স্তরের অসহায় মানুষের কল্যাণে সংরক্ষিত রেখেছেন। যেসব লোক শহরে আসেন চিকিৎসা করাতে এবং ঢাকা শহরের মতো ব্যস্ত ও বড় শহরে কোন ঠাঁই তাদের নেই, তাদের জন্য কক্ষটি বরাদ্দ রেখেছেন। কক্ষটি অত্যাধুনিক সকল সুবিধা সম্বলিত। এক কথায় রাজকীয় । তিনি তাঁর মায়ের পূণ্যস্মৃতি জন্য মায়ের নামে নামাকরণ করেছেন। সময় সল্পতার জন্য প্রসাদুপম বাড়িটির ঠিকানা এখানে উল্লেখ করা গেলো না। যারা প্রয়োজন মনে করবেন, তারা নির্দধায় জনাব সালামের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। কোন ধরনের খরচ তিনি নেন না। ধন্যবাদ জানাই এই বড় মনের মানুষটিকে।
চট্টগ্রামের জনাব মাহবুবুল ইসলাম সুন্দর লিখে থাকেন। তার লিখা আবার চালু হোক, এ কামনা রইলো। আরও আছেন ফারুক ফয়সাল। তিনিও ভালো লিখছেন। কবিতা নিয়মিত লিখে থাকেন জনাব এম এ বাকী। তাঁর নিরলস ভাবে প্রায় প্রতিদিন লেখার সক্ষমতা আমাদেরকে অবাক করে। গদ্য-পদ্য মিলিয়ে লিখে থাকেন গোপাল চন্দ্র চৌধুরী। তিনি অনেক গুণের অধিকারী একজন ব্যাক্তি। গান রচনা, সুর দেয়া ও কন্ঠ দেয়া ছাড়াও তিনি ভালো বাঁশী বাজাতে পারেন। শ্রদ্ধা জানাই প্রতিভাধর গুণী মানুষটিকে। জনাব মীর কামরুল ইসলাম বুলবুল ভালো লিখতেন, এখনও চলমান আছে। তবে নিয়মিত নয়। ( চলবে)

বাংলাদেশ সময়: ২০:১৫:০৫ ● ৪৪ বার পঠিত