 স্বপন চক্রবর্তী,বঙ্গ-নিউজ:  ধানমণ্ডির একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে জাল নোট তৈরির কারখানার সন্ধান পায় র্যাব। গত ১৮ জুলাই পুরান ঢাকার বংশাল ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩৫ লাখ টাকার জাল নোট এবং তা তৈরি বিভিন্ন উপকরণসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের করা মামলায় বলা হয়, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এই চক্রটি জাল নোট তৈরি করছিল। কোরবানির আগে এই জাল নোট পশুর হাট, শপিংমল ও অন্যান্য পন্যক্রয় বিক্রয়ের মলসহ বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহারের পরিকল্পনা ছিল তাদের।
        স্বপন চক্রবর্তী,বঙ্গ-নিউজ:  ধানমণ্ডির একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে জাল নোট তৈরির কারখানার সন্ধান পায় র্যাব। গত ১৮ জুলাই পুরান ঢাকার বংশাল ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩৫ লাখ টাকার জাল নোট এবং তা তৈরি বিভিন্ন উপকরণসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের করা মামলায় বলা হয়, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এই চক্রটি জাল নোট তৈরি করছিল। কোরবানির আগে এই জাল নোট পশুর হাট, শপিংমল ও অন্যান্য পন্যক্রয় বিক্রয়ের মলসহ বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহারের পরিকল্পনা ছিল তাদের।
তার আগে ৩০ জুন মিরপুর ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার দুটি বাসা থেকে চার কোটি টাকার জালনোটসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব। ওই জালনোটেরও লক্ষ্য ছিল কোরবানির হাট।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশুর হাটগুলোতে বড় অঙ্কের নগদ লেনদেন বেশি হয়ে থাকে । আর এই সুযোগটি নিতেই জাল নোটের কারবারিরা এই সময়ে সক্রিয় হয়ে ওঠে।
তাই ঈদের হাট বসার আগেই এসব ‘অসাধু কারবারীদের’ খুঁজে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বেড়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পাশাপাশি পশু ব্যবসায়ী এবং সাধারণ জনগণকে নগদ লেনদেনে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিটি করপোরেশন।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এবার পশুর অনলাইন হাটকে জনপ্রিয় করতে বিভিন্ন পদক্ষেপের পাশাপাশি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় এবার ১৭টি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১১টি এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ছয়টি হাট বসছে।
এছাড়া দুই সিটিতে আরও দুইটি স্থায়ী হাটেও পশু কেনাবেচা হবে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকায় বসছে পশুর হাট। যদিও কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি এবার মহামারীর মধ্যে রাজধানীতে কোরবানির পশুর হাট না বসানোর সুপারিশ করেছিল।
এসব হাটকে কেন্দ্র করে এক দল অসাধু চক্র জাল টাকা ছড়াতে পারে এমন চিন্তা থেকে হাটগুলোতে টাকা গণনা ও জাল নোট সনাক্তকরণ যন্ত্র স্থাপন করবে র্যাব ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য সংস্থা।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক আশিক বিল্লাহ জানান, “জাল নোটের কারবারিরা উৎসবকে কেন্দ্র করে সব সময় সক্রিয় হয়ে যায়।
“আসন্ন কোরবানির হাটকে কেন্দ্র করে এই চক্রের সদস্যরা সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে আমাদের কয়েকটি সফল অভিযানে জাল নোট উদ্ধার এবং জাল নোট তৈরির যন্ত্রপাতি জব্দ করে বেশ কয়েক জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
যে সব এলাকায় ফ্ল্যাটে বা বাড়িতে বসে জাল নোট তৈরি করে সেসব এলাকায় র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
“তারপরও হাটগুলোতে র্যাবের টহল থাকবে। হাটে জাল নোট চিহ্নিত করার যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হবে। এরপরও আমরা বলবো জনগণ যেন সচেতন হয়ে নগদ লেনদেন করেন।”
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মশিউর রহমান (ডিসি) বলেন, “জাল নোটের কারবারিরা এখন অনেক চালাক হয়ে গেছে।
“ঈদ আসলে এখন আর আগের মতো ঢাকার ভেতরে থাকে না। তারা ঢাকার বাইরে জাল নোট তৈরির কাজ করে, যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে তাদের কাজ করতে পারে। তারা এখন ঢাকার বাইরে থেকে তাদের কাজ চালাতে তৎপর রয়েছে।”
“ঈদে জাল টাকার ছড়াছড়ির বেশি সুযোগ পায় বলে তারা ঢাকার বাইরে থেকে কাজ করে তাদের লোকদের নিয়ে টাকাগুলো বাজারে ছড়িয়ে দেয়,” বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
এসব বিষয় মাথায় নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশও সেইভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “দেশের যে অঞ্চলেই তারা কাজ করুক না কেন তাদের ধরতে আমরা সর্বদা প্রস্তুত আছি। আমাদের বিভিন্ন টিম এই বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে।”
ঢাকার গাবতলী পশুর হাটে গরু আসছে, যদিও বেচাকেনা এখনও জমে ওঠেনি। ঢাকার গাবতলী পশুর হাটে গরু আসছে, যদিও বেচাকেনা এখনও জমে ওঠেনি।
র্যাবের পরিচালক আশিক বিল্লাহ ও ডিবির ডিসি মশিউর দুজনই পশুর হাটে জাল টাকার কারবারিদের থেকে জনগণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
টাকা লেনদেনের সময় একটু বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে সবাইকে অনুরোধ করেন তারা।
ঈদকেন্দ্রিক হাটগুলোতে জাল নোটের কারবারিদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম।
তিনি  বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে হাটগুলোতে জাল টাকা চিনতে সচেতনামূলক বেশ কিছু ক্যাম্পেইন করা হবে। পাশাপাশি হাটে হাটে বিভিন্ন জায়গায় সচেতনতামূলক ব্যানার ও পোস্টার দেওয়া হবে। কীভাবে জাল টাকা শনাক্ত করা যায়, সেই বিষয়ে মানুষকে জানানো হচ্ছে।”
এছাড়া জাল নোট শনাক্তে হাটগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হবে জানিয়ে সিরাজুল বলেন, “হাটে হাটে আমাদের কর্মীরা কাজ করবে। আমরা বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মীদের দিয়ে এই কাজ করিয়ে থাকি। সেই ব্যবস্থা এবারও আমরা রাখছি।”
জাল নোট শনাক্ত করাসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও বিভাগের সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. রাসেল সাবরিন।
 বাংলাদেশ সময়: ১১:৪০:৫৫   ৮৫২ বার পঠিত   #ঈদ  #কারখানা  #কোরবানি  #গরুর হাট  #জাল টাকা  #র্যাব