হজ্জের রাজনৈতিক গুরুত্ব

Home Page » ফিচার » হজ্জের রাজনৈতিক গুরুত্ব
মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩



img_20130917_184815.jpgবঙ্গ-নিউজ ডটকম: মুহাম্মদ আবদুল হাই নদ্ভী
১. ঐক্য ও বিশ্বভ্রাতৃত্ব সৃষ্টিঃহজ্জের সময় মুসলমানগণ বিশ্ব-ভ্রাতৃত্বের নব প্রেরণায় উদ্দীপ্ত হয়ে একতাবদ্ধ হয়। এই ঐক্য এতই পূর্ণাঙ্গ যে, এখানে প্রভু ও ভ্রাতৃত্বের মাঝে কোন পার্থক্য সৃষ্টি করা যাবে না।

২. বিশ্ব মুসলিমের বৃহত্তম সম্মেলনঃ হজ্জ মুসলমানদের সব চেয়ে বড় ঐক্য সম্মেলন। অন্য কোন কারণে এত অধিক সংখ্যক মুসলমান কখনো একত্রিত হয় না।

৩. একতাবোধের উন্মেষ ঘটায়ঃহজ্জ কেবল ঈমানকেই বলিষ্ঠ করে না; বরং এটা সমগ্র মুসলিম জনতাকে ঐক্যবদ্ধ করার পন্থা হিসেবেও কাজ করে। যেমন, ইরশাদ হচ্ছে- “আর তোমরা সকলে আল্লাহ্র রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ কর; পরষ্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।”

৪. বিশ্বজনীন ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টিঃ হজ্জের সময় ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মিল, পোশাকের মিল, জীবনযাত্রার মিল, অনুভূতির মিল, দৃষ্টিভঙ্গির মিল- এ প্রত্যেকটি বিষয়ই মুসলমানদের বিশ্বজনীন ভ্রাতৃত্ববোধ উন্নয়নে সাহায্য করে।

৫. সমস্যা সমাধানে নীতি নির্ধারণঃ হজ্জের মৌসুমে মুসলিম রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা মক্কা শরীফে সমবেত হয়ে পারষ্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভাবের আদান-প্রদান এবং বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের মধ্যে বিদ্যমান সমস্যার সমাধান নীতি নির্ধারণ করতে পারে।

৬. দ্বীন কায়েমের দৃপ্ত শপথ গ্রহণের শক্তিশালী মাধ্যমঃ মুসলমানদের রাজনীতি হবে কুরআন ও সুন্নাহ্ ভিত্তিক। হজ্জের মাধ্যমে মুসলমানগণ মহান আল্লাহ্র জমিনে আল্লাহ্র দ্বীন প্রতিষ্ঠায় দৃপ্ত শপথ নিতে পারে। ইরশাদ হচ্ছে, “তোমরা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং তাতে সৃষ্টি করোনা অনৈক্য।”

৭. আল্লাহ্র খিলাফত প্রতিষ্ঠাঃ হজ্জ পৃথিবীতে ইসলামী খিলাফতের আদর্শে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রেরণা যোগায়। আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেন, “আর তোমার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদের বললেন, আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি বানাতে যাচ্ছি।”

৮. মত পার্থক্যের অবসানঃ বিভিন্ন জাতি ও বর্ণের লোক ইসলাম গ্রহণ করায় যে মত পার্থক্যের সৃষ্টি হয়, হজ্জের মাধ্যমে তার অবসান ঘটে।

৯. ভৌগলিক জ্ঞান লাভ হয়ঃহজ্জ হাজীর ভৌগলিক জ্ঞানের সীমা সম্প্রসারিত করে। হজ্জ বিভিন্ন দেশের প্রাকৃতিক অবস্থান, জলবায়ু, রীতি-নীতি ও আচার-ব্যবহার সম্পর্কে জ্ঞান লাভের সুযোগ সৃষ্টি করে। কাজেই হজ্জ মুসলমানদের ভাবগত ও কৃষ্টিগত প্রগতির পথে এক বলিষ্ঠ পদক্ষেপ।

১০. মুসলিম বিশ্বের উন্নতী সাধনের মহা সুযোগঃহজ্জ সমাপনের পরে বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রের সামাজিক, অর্থনৈতিক সমস্যা সম্পর্কে পরষ্পর আলাপ আলোচনা ও ধারণা বিনিময় করার মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বের উন্নতী সাধন করা সম্ভব হয়।

১১. মুসলিম বিশ্বে একতা সৃষ্টিকারীঃসমগ্র মুসলিম জাহানকে ঐক্যবদ্ধ করতে হজ্জের ভুমিকা অপরিসীম। (বিশ্ব মুসলিমের উপর যে নির্যাতন চলছে তা অবসানকল্পে মুসলমানদের ঐক্য পূর্ব শর্ত এবং সকল মুসলিম রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ধারা একই রকম হওয়া অপরীহার্য। হজ্জ সকলকে একই সূত্রে গেঁেথ ঐক্য ও সহাবস্থান সৃষ্টির প্রতি আহ্বান করে।

১২. দেশ গড়ার ঐক্য সৃষ্টির সুযোগ আসেঃ হজ্জ মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য আনয়ন করে। ফলে মুসলমানগণ ঐক্যবদ্ধতার শিক্ষায় উজ্জীবিত হয়ে দেশ গড়ার কাজে মনোনিবেশ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়।

১৩. সমকালীন বিশ্ব সম্পর্কে জ্ঞান লাভঃ  হজ্জের মাধ্যমে মুসলমানগণ বিভিন্ন দেশের রীতি-নীতি কৃষ্টি-কালচার সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে।

লেখক -

চেয়্যারম্যানঃ- আল্লামা শাহ্ আবদুল জব্বার ফাউন্ডেশন

বায়তুশ শরফ, ধনিয়ালা পাড়া. চট্টগ্রাম।

বাংলাদেশ সময়: ১৮:৪৯:০৭   ৭৬৬ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ফিচার’র আরও খবর


অ্যানেন্সেফ্লাই কী? - রুমা আক্তার
শেখ হাসিনা বাংলাদেশে নারী ক্ষমতায়নের অগ্রদূত : স্পিকার ; ১০০০ নারী উদ্যোক্তা’র মধ্যে ৫ কোটি টাকার অনুদান প্রদান
“ম্রো’ আদিবাসীর গো হত্যা’ অনুষ্ঠাণ ” - তানিয়া শারমিন
আলোকিত স্বপ্ন নিয়ে তৃতীয় বর্ষে রবিকর ফাউন্ডেশন
নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন রক্ষায় প্রয়োজন জেন্ডার সংবেদনশীল নীতির পর্যালোচনা
জিনগত ত্রুটির অপর নাম “ডাউন সিনড্রোম”- রুমা আক্তার
মোহাম্মদ শাহ আলমের জীবন ও কর্ম
ইসফাহান নেসফে জাহান
সিলেটে গ্রুপ ফেডারেশনের কর্মশালায় বির্তকিত মুরাদ- আয়োজকদের দুঃখ প্রকাশ
ডলারের দাম যেভাবে বাড়ছে, টাকার দাম কেন কমছে

আর্কাইভ