২৬ আসামির মৃত্যুদন্ড কার্যকর করে জল্লাদ শাহজাহানের মুক্তি

Home Page » জাতীয় » ২৬ আসামির মৃত্যুদন্ড কার্যকর করে জল্লাদ শাহজাহানের মুক্তি
রবিবার ● ১৮ জুন ২০২৩


জল্লাদ শাহজাহান মুক্তি পেলেন

বঙ্গ-নিউজ: ৩২ বছর কারাগারে সাজা ভোগ করার পর মুক্তি পেলেন জল্লাদ শাহজাহান ভুইয়া। আজ  দুপুর ১২টার দিকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান শাহজাহান। তিনি কারাগারে থাকা অবস্থায় ২৬ জন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে দড়িতে ঝুলিয়েছেন।

কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার বলেন, ৪২ বছরের সাজা হয়েছিল শাহজাহানের। এরমধ্যে ১০ বছর ৫ মাস ২৮ দিন মওকুফ (রেয়াত) পেয়েছেন। তাই প্রায় ৩২ বছরের সাজা ভোগ করার পর তিনি মুক্তি পেলেন।

কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা মামলার ৬ আসামি, ৬ জন যুদ্ধাপরাধী, এরশাদ শিকদার, বাংলাভাই, আতাউর রহমান সানী, শারমীন রীমা হত্যার আসামি, ডেইজি হত্যা মামলার আসামিসহ আলোচিত ২৬ জনকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়েছেন শাহজাহান। মূলত সাজা কমানোর লক্ষ্যেই জল্লাদের দায়িত্ব নেন শাহজাহান।

কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে শাহজাহান ভূঁইয়া বলেন, প্রতিটা ফাঁসির ক্ষেত্রেই কিছু আবেগ তাড়িত বিষয় ঘটে। আমার হাত দিয়ে একটা মানুষ মরে যাচ্ছে। এটা দেখা অনেক কষ্টের। মানুষ যত অপরাধই করুক না কেন, যখন সে মৃত্যুর মুখে পতিত হয়, তখন খুব মায়া লাগে। সে মায়া না হয় আমি করলাম, কিন্তু কোর্টতো করবে না, আইনতো তাকে ক্ষমা করবে না।

এদিকে বহুল আলোচিত এরশাদ শিকদার ও বাংলাভাইয়ের ফাঁসির ঘটনার কথা উল্লেখ করে শাহজাহান ভূঁইয়া বলেন, এরশাদ শিকদারকে যখন ফাঁসির মঞ্চে দাঁড় করানো হয়, তখন তিনি আমাকে একটা কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি জীবনে কখনও অন্যায় করিনি। আমার জন্য দোয়া করবেন।’ অন্যদিকে বাংলা ভাই একটা শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন, তিনি বলেছিলেন, ‘মরার পরে আমার ছবিটা যেন না ওঠানো হয়।’

কারাফটকের সামনে শাহাজাহান ভূঁইয়া আরও বলেন, এতগুলো বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েও ভালো লাগছে। আমার এক বোন আছে। তাকে কখনও দেখিনি। কিন্তু ফোনে কথা হয়েছে। সে আমাকে কোনো দিন দেখতেও আসেনি।

শাহজাহান বলেন, আমার কোনো ঘর-বাড়ি নেই। কারাগারে এক আসামি ছিলেন, তার বাসা ঢাকার বসুন্ধরায়। আপাতত সেখানেই উঠব।

এ সময় কথা বলতে বলতে অঝোরে কেঁদে ফেলেন শাহজাহান। তিনি বলেন, ‘এতগুলো বছর জেল খাটার পর আমার কিছুই নেই। আমি এখন কী করব, কোথায় যাব, কী খাব? প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ, আমাকে যেন বাড়িঘর ও একটি কর্মসংস্থান করে দেন।’

জানা গেছে, শাহজাহান ভূঁইয়ার বাড়ি নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ইছাখালী গ্রামে। ১৯৯১ সালে মানিকগঞ্জের একটি মামলায় গ্রেপ্তার হন শাহজাহান। তার নামে মোট ৩৬টি মামলা ছিল। এরমধ্যে একটি অস্ত্র, একটি ডাকাতি এবং বাকি ৩৪টি হত্যা মামলা।

কারাভোগের এ সময়ে মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারসহ দেশের বিভিন্ন কারাগারে ছিলেন তিনি। তার কয়েদি নম্বর ছিল ২৫৮৯/এ। ৭৩ বছর বয়সী শাহজাহান ব্যক্তিগত জীবনে অবিবাহিত।

বাংলাদেশ সময়: ২১:৪৭:২৭ ● ১৫৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ