ধর্মপাশায় ‘বীর নিবাস’ নির্মাণে অনিয়ম ও গাফিলতির অভিযোগ

Home Page » সারাদেশ » ধর্মপাশায় ‘বীর নিবাস’ নির্মাণে অনিয়ম ও গাফিলতির অভিযোগ
বৃহস্পতিবার ● ৩১ আগস্ট ২০২৩


ধর্মপাশায়  ‘বীর  নিবাস’ নির্মাণে অনিয়ম ও গাফিলতির অভিযোগ এ মানববন্দন

সাজেদা আহমেদ, বিশেষ প্রতিনিধি, বঙ্গ-নিউজ:

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলায় অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রথম পর্যায়ের ৯টি বীর নিবাস নির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ না করা ও কাজে অনিয়ম, গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে।
সেই সাথে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের সহোদর ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রুকন এই অনিয়মের মূলহোতা বলে জানিয়েছেন অভিযোগকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাগন ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানেরা।
তারা বলেন, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের কাছ থেকে ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রোকন কাজ ছিনিয়ে নিয়ে নিজের লোকজন দিয়ে করানোর ফলে কাজে গাফিলতি হয়েছে। যে কারণে কাজ এখনও শেষ হয়নি।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়,২০২১-২২ অর্থ বছরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১ কোটি ২০ লাখ ৫৫৯ টাকা ব্যয়ে ৯টি বীর নিবাস নির্মাণের কাজ পায় ধর্মপাশার মেসার্স জব্বার বিল্ডার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

এদিকে নিবাস নির্মাণ কাজে অনিয়ম ও গাফিলতির প্রতিবাদে গত বুধবার (৩০ আগষ্ট) বেলা সাড়ে এগারটায় ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলার ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ’ এর উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত মানববন্ধনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির তালুকদার, জহুর আলী, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের উপদেষ্টা শামীম আহমেদ মুরাদ, সভাপতি সরফরাজ আহমদ খান পাঠান, সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন তালুকদার বক্তব্য দেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কৌশলে নামমাত্র লাভ দিয়ে ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রোকন ঠিকাদারের কাছ থেকে সেই কাজ নিজে করাবেন বলে নিয়ে যান। পরে চুন্নু মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে দিয়ে বীর নিবাসের নির্মাণ কাজ আরম্ভ করেন। কিন্তু চুন্নু মিয়া নিম্ন মাণের উপকরণ দিয়ে নির্মাণ করতে থাকলে মোদাহরপুর গ্রামের উপকারভোগী প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল মিয়ার স্ত্রী মোছা. আমিনা ও প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম ওমর ফারুকের ছেলে হাবিবে দুজাহান ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেন। ইউএনও দুইবার কাজ পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পান। কিন্তু ঠিকাদার বা চুন্নুর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় চুন্নু অভিযোগকারীদের বীর নিবাস নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। কাজের চুক্তি অনুযায়ী গত বছরের ২৮ ফেব্রয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর হাবিবে দুজাহান উপকারভোগীদের পক্ষ থেকে এর প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তবে সাবেক ইউএনও ঠিকাদারের জামানত বাতিলের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে নির্দেশ দেন এবং ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সবকটি বীরনিবাস নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য চুন্নুকে সময় দেন। কিন্তু চুন্নু কাজ শেষ করতে পারেনি। এছাড়াও ঠিকাদার হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করে ১৬ মার্চ আরও তিন মাসের সময় বর্ধিত করে। কিন্তু ওই সময়েও কাজ শেষ হয়নি।
জানতে চাইলে ঠিকাদার মঞ্জুরুল হক সুজন বলেন, এ ব্যাপারে আমার কোন বক্তব্য নেই।
,এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসন রোকনের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন,’প্রথম পর্যায়ের ৯টি ‘বীর নিবাস’ নির্মাণ কাজ এখনো অসমাপ্ত রয়েছে। এটি দুঃখ জনক।এ বিষয়ে জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি। এখন তার সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি।’

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩৭:৪৪ ● ২৩৫ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ