ডেঙ্গুতে ফরিদপুরে এত মৃত্যু কেন

Home Page » প্রথমপাতা » ডেঙ্গুতে ফরিদপুরে এত মৃত্যু কেন
বৃহস্পতিবার ● ৫ অক্টোবর ২০২৩


ডেঙ্গুতে ফরিদপুরে এত মৃত্যু কেন

 বঙ্গ-নিউজঃ   ফরিদপুরে ডেঙ্গু ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যু। ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে তিনজন মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মোট ৬৪ জনের মৃত্যু হলো, যাদের ৪৫ জনই মারা গেছেন সেপ্টেম্বরে।

জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে এবার ভর্তি ডেঙ্গু রোগী ১২ হাজার ২৮১ জন। এর আগে এক বছরে এত আক্রান্ত ও মৃত্যু দেখেনি জেলাটি। শয্যা সংকটে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা চলছে হাসপাতালের বারান্দা ও সিঁড়িতে। স্যালাইন সংকটে ব্যাহত চিকিৎসাসেবা। ফরিদপুরে এবার ডেঙ্গুর উল্লম্ফনে আশপাশের জেলার রোগীর চাপ, ভাইরাসটির ধরন পরিবর্তন ছাড়াও অপ্রতুল চিকিৎসাসেবাকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, ফরিদপুরে এবার ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যু অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। নিজ প্রতিষ্ঠানের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার লিটন গাঙ্গুলী সমকালকে জানান, তাদের হাসপাতালে বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা থাকায় সব জায়গা থেকে বিশেষ করে গুরুতর রোগী ভর্তি হন। ডেঙ্গু আক্রান্তদের ক্ষেত্রে পঞ্চম থেকে সপ্তম– এ তিন দিন খুবই ক্রিটিক্যাল। এ সময় হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় অল্প বয়সীরাও মারা যাচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি হলেই ভালো হয়ে যাবে– এ ধারণা থেকে বের হয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

ফরিদপুর জেলা বিএমএ সভাপতি ডা. আ স ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী টিটো বলেন, ‘ভাইরাসের ধর্মই হচ্ছে প্রতিনিয়ত সে তার রূপ পরিবর্তন করে শক্তিশালী হয়। এবার দেশে ডেঙ্গু এসেছে ভিন্ন চরিত্র নিয়ে। রোগীদের শক সিনড্রোম আগের চেয়ে অনেক বেশি। এ জন্য চিকিৎসকদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।’

ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এনামুল হক বলেন, ‘ধারণক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি ডেঙ্গু রোগী নিয়ে গত এক মাস আমরা চিকিৎসা চালাচ্ছি। সরকারি হওয়ায় রোগী ফেরতের সুযোগ নেই।’ আশপাশের জেলার রোগীদের কারণে হাসপাতালে চাপ বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বৃহত্তর ফরিদপুর তো আছেই, ঝিনাইদহ-মাগুরা থেকেও প্রতিনিয়ত ডেঙ্গু রোগী আসছে। বেশির ভাগ রোগীই আছে খুব ক্রিটিক্যাল অবস্থায়। এ জন্য মৃত্যুহারও বেশি। রোগী বেশি হওয়ায় স্যালাইনেরও সংকট দেখা দিয়েছে। সব সময় ১০টি আইসিইউতে রোগী থাকছে। চাইলেও ক্রিটিক্যাল রোগীকে আইসিইউ সেবা দিতে পারছি না। সবাই সচেতন হলে এবং শুরু থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে হাসপাতাল পর্যন্ত আসতে হতো না।’

জেলা সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে চিকিৎসাধীন এক কিশোর ও দুই নারী মারা গেছেন। তারা হলেন– মাগুরার শ্রীপুরের শেফালী বেগম (৩০), অনিক বিশ্বাস (১৬) ও ফরিদপুরের মধুখালীর সালেহা বেগম (৫০)। এ সময় জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৪৪ জন। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৬১৪ জন। এ পর্যন্ত মোট ১৩ হাজার ২৮১ জন ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১২ হাজার ৩৬৭ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০:২১:৪৩ ● ২১৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ