টিকা উৎপাদন করে দেওয়ার সক্ষমতা আমাদের আছে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

Home Page » জাতীয় » টিকা উৎপাদন করে দেওয়ার সক্ষমতা আমাদের আছে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মঙ্গলবার ● ১৬ নভেম্বর ২০২১


---

বঙ্গনিউজঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সারাবিশ্বে কোনো মানুষ যেন করোনা ভ্যাকসিন থেকে দূরে না থাকে। আমাদেরকে সুযোগ দিলে আমরা উৎপাদন করব। আমরা বিশ্বে দিতে পারব। সে সক্ষমতা আমাদের আছে।

বঙ্গবন্ধুর নামে পুরস্কার চালু করায় ইউনেসকোকে ধন্যবাদ জানিয়ে গতকাল  (১৫ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে আনা সাধারণ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। আলোচনা শেষে ধন্যবাদ প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে সংসদে গৃহীত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের টিকা সর্বজনীন হতে হবে। এটা উন্মুক্ত করতে হবে। এটা জনগণের প্রাপ্য। জনগণের সম্পদ হিসেবে দিতে হবে। জমিও নিয়ে রেখেছি। এভাবে উদ্যোগ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’

সাম্প্রতিক বিদেশ সফরের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আমাদের যে সাফল্য সেটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। আমি এটাও বলে এসেছি-আমরা নিজেরা ভ্যাকসিন তৈরি করতে চাই। ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে যে বাধাগুলো আছে, সেগুলো আপনাদের সরিয়ে দিতে হবে। করোনাভাইরাসের টিকা যেন সর্বজনীন হয়, সেই আহ্বানও বিশ্বনেতাদের জানিয়ে এসেছি।

গ্লাসগোতে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন এবং প্যারিসে ইউনেসকোর ৭৫ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে যোগদানের পাশাপাশি বেশকিছু অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে দুই সপ্তাহের সফর শেষে রবিবার সকালে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী। ১২ নভেম্বরে প্যারিসে ইউনেসকো সদর দপ্তরে সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য ‘ইউনেসকো-বাংলাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি।

বাংলাদেশের প্রস্তাবে গতবছর ডিসেম্বরে ইউনেসকো নির্বাহী পরিষদের শরৎকালীন অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে বঙ্গবন্ধুর নামে আন্তর্জাতিক এই পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়, এটা বঙ্গবন্ধুর নামে জাতিসংঘের কোনো অঙ্গসংস্থার চালু করা প্রথম আন্তর্জাতিক পুরস্কার।

বঙ্গবন্ধুর নামে পুরস্কার চালু করায় ইউনেসকোকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭৫ এর পর আমরা কী দেখেছি? ১৯টা ক্যু হয়েছে। হাজারো সেনাবাহিনীর অফিসার ও সৈনিক, বিমান বাহিনীর অফিসার ও সৈনিক এবং সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। কারাগারে ফেলে রাখা হয়েছে, নির্যাতন চলেছে। গুলি-অস্ত্র, দুর্নীতি-এটাই ছিল জননীতি। এর বাইরে একটা দেশকে যে উন্নত করা যায়, সেদিকে কোনো আন্তরিকতাই আমরা দেখিনি। আমি বাংলাদেশে আসার পর কী দেখেছি? বিজ্ঞান পড়েই না মানুষ। এই অবস্থা! বিজ্ঞানের প্রতি কোনো আগ্রহ নেই। গবেষণা তো ছিলই না। কোনো বিশেষ বরাদ্দও ছিল না।’

বৈশ্বিক মানবতার অভিন্ন স্বার্থে দৃঢ় অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানবৈশ্বিক মানবতার অভিন্ন স্বার্থে দৃঢ় অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আমরা পিছিয়ে নেই। আমি ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশের জনগণকে। তারা বারবার আমায় ভোট দিয়েছে। সেবা করার সুযোগ দিয়েছে। আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। এক দশকের ভেতরে বাংলাদেশের পরিবর্তন সারাবিশ্বে একটা মর্যাদা পেয়েছে। বাংলাদেশের কাউকে বাইরে গিয়ে কথা শুনতে হয় না।’

তিনি বলেন, ‘ভালো কাজটা চোখে না দেখলে আমাদের কিছু বলার নেই। আমাদের যে সিআরআই আমরা তৈরি করেছি, সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন-এটা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটা গবেষণা প্রতিষ্ঠান। যে প্রতিষ্ঠানটা ২০০১ সালে অপারেশন ক্লিন হার্টের সময় খালেদা জিয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। আমরা পুনরায় চালু করি। সেখান থেকে ইয়াংবাংলা নামে একটা উদ্যোগ নেওয়া হয়। যুবসমাজকে উৎসাহিত করা। তাদেরকে স্টার্টআপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। তাদেরকে এটাও বলা হয়, শুধু চাকরির পেছনে ঘুরবে কেন, চাকরি দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবে। নিজের পায়ে দাঁড়াবে। নিজেরা ব্যবসা করবে, নিজেরা অন্যকে চাকরি দেবে। এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে আমারে সরকারের আমলে।’

স্পিকারের উদ্দেশে সংসদ নেতা বলেন, ‘আপনি জানেন যে আমার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং আমাদের কিছু তরুণ সংসদ সদস্য সকলে মিলেই কিন্তু ইয়াংবাংলা স্টার্টআপ প্রোগ্রাম নিয়েছে। এই প্রোগ্রামের জন্য আমরা বিশেষ বরাদ্দও রেখেছি। ছেলেমেয়েরা যদি কেউ উদ্যোগ নিতে চায়, আমরা তাদের পাশে দাঁড়াব। অনলাইনে কেনাবেচা, ই-কমার্স, টেন্ডার এগুলো তো হয়েছে বাংলাদেশে। সামনে আরও সময় আছে। আরও হবে। এক দিনে তো হয় না। ধাপে-ধাপে করতে হয়।’

দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রীদেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী
‘মোটিভ ক্রিয়েশন’ নামে উগান্ডার একটি সংগঠন যে এবারের ‘ইউনেসকো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ পুরস্কার পেয়েছে-সে বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একদিন ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশেরও কোনো না কোনো উদ্যোক্তা এই পুরস্কারটা পাবে বলে আমি আশা করি।’

আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক চিফ হুইপ আব্দুস শহীদ কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ বিধিতে সাধারণ আলোচনার প্রস্তাবটি তোলেন।

প্রস্তাবের ওপর অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন-আওয়ামী লীগের আমির হোসেন আমু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ওয়াসিকা আয়শা খান, বিরোধী লীয় উপনেতা জিএম কাদের, জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, বিএনপির হারুনুর রশীদ, জাপার রুস্তম আলী ফরাজী ও পীর ফজলুর রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ১২:০৬:৩০ ● ৯৬৫ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ