মিলছে না আয়-ব্যয়ের হিসাব
Home Page » চাকুরির বাজার » মিলছে না আয়-ব্যয়ের হিসাববঙ্গ-নিউজঃ ঈশ্বরদী পৌর এলাকার সাঁড়াগোপালপুর গ্রামের শাবানা খাতুন। মাসিক ১১ হাজার টাকা বেতনে কাজ করেন ঈশ্বরদী ইপিজেডের একটি কারখানায়। সেই হিসাবে তাঁর প্রতিদিনের আয় ৩৬৬ টাকা। একই গ্রামের গৃহবধূ টিয়া খাতুন মাসিক ৯ হাজার টাকা বেতনে কাজ করেন আরেক প্রতিষ্ঠানে। তাঁর প্রতিদিনের আয় ৩০০ টাকা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে এ টাকায় স্বাচ্ছন্দ্যে চলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
এ দুই শ্রমিক জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের তুলনায় বেতন কম। যাতায়াত, চাল, ডাল, তেল, লবণ, সবজিসহ অনেক জিনিসপত্র কিনতে নাভিশ্বাস উঠছে। অনেকটা নুন আনতে পানতা ফোরানোর মতো অবস্থা। এক কেজি বেগুন ৬০ টাকা। কচুর লতি ৭০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। অন্য সবজিও ৪০ থেকে ৫০ টাকা। একটি ডিমও এখন ১৩ টাকা। প্রয়োজনীয় অনেক জিনিসের দাম নাগালের বাইরে। সপ্তাহে একদিন ডিম রান্না করেন। তাও সন্তানদের পাতে একটির পরিবর্তে অর্ধেক দিতে হচ্ছে।
ইপিজেডের বিভিন্ন কারখানায় শাবানা ও টিয়ার মতো প্রায় ১৩ হাজার নারী শ্রমিক রয়েছেন। বড় অংশই ঈশ্বরদীর বাসিন্দা। পাশের লালপুর, বাঘা, চারঘাট, বড়াইগ্রাম, আটঘরিয়া, চাটমোহর, টেবুনিয়া, পাবনা, কুষ্টিয়া, ভেড়ামারা, দৌলতপুরের শ্রমিকও আছেন। শ্রমিকরা বলছেন, সামান্য আয়ে প্রতিদিন ভর্তা, সবজি কিংবা ডাল-ভাত ঠিকমতো জোগাড় করতে পারছেন না। পরিবারের সদস্যদের জন্য মাছ-মাংস কেনা কঠিন হয়ে পড়েছে। সন্তানরা মাছ কিংবা মাংস দিয়ে ভাত খেতে চাইলে লজ্জায় মুখ লুকাতে হয়। দ্রব্যমূল্য অনুযায়ী বেতন বাড়ানো হয়নি। কথা বললে চাকরি হারানোর ভয় থাকে। বাধ্য হয়ে এ বেতনেই কাজ করছেন। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছে, বেপজার নিয়ম অনুসরণ করেই শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয়।
ইপিজেড কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ৪১টি কারখানার মধ্যে চালু আছে ২০টি। চালুর অপেক্ষায় ও নির্মাণাধীন রয়েছে ২১টি। শ্রমিক-কর্মচারী আছে প্রায় ১৮ হাজার। এর মধ্যে নারী শ্রমিক ১২ হাজার ২০০ জন। বিদেশি ৭৬ জন কর্মরত রয়েছেন। প্রতিদিন সকাল ৮টায় কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা। সে কারণে নারীদের ঘুম থেকে উঠতে হয় ভোরে। রান্না ও সংসারের কাজ সেরে কারখানার উদ্দেশে রওনা হন ৬টার মধ্যে। রাতে বাড়ি ফেরেন। কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পর ফের শুরু হয় কাজে যাওয়ার প্রস্তুতি।
জানা গেছে, সাধারণ নারী শ্রমিকদের মাসে গড়ে বেতন ৯ থেকে ১১ হাজার টাকা। তাদের প্রতিদিনের মজুরি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। তবে অভিজ্ঞ কিছু শ্রমিকের বেতন বেশি। টিয়া খাতুন জানান, দক্ষ শ্রমিক হলেও প্রতিষ্ঠান বদল করায় তাঁর বেতন ১০ হাজার থেকে কমিয়ে ৯ হাজার টাকা করা হয়েছে। নারী শ্রমিকরা বলছেন, দিনে ৫০০-৬০০ টাকা না হলে ন্যূনতম বাজার খরচ হয় না। আগে কর্মস্থলে যাতায়াতে ২০-৩০ টাকা খরচ হতো। এখন বেড়ে হয়েছে ৬০-৭০ টাকা। বিদ্যুৎ বিল, জ্বালানি, পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা, ওষুধ কেনা, কাপড়-চোপড়সহ অনেক ধরনের খরচ রয়েছে। সামান্য আয়ে সব জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মুদি দোকান থেকে অধিকাংশ শ্রমিকই বাকিতে জিনিসপত্র কেনেন। বেতন পেলে দেনা শোধ করে আবার বাকিতে পণ্য নেওয়া শুরু করেন। তবে শাক-সবজি, ডিম কিংবা পাঙাশ-সিলভার কার্প মাছ কেউ বাকিতে দেয় না। এতে কষ্ট বাড়ে জানিয়ে নারী শ্রমিকরা জানান, মুদি দোকানে হিসাবের খাতায় বাকির পরিমাণ বাড়ছে। অনেকের খেয়ে না খেয়ে চলতে হচ্ছে। মাসের শুরুতে কিছুদিন স্বাচ্ছন্দ্যে চলে। বাকি দিনগুলো কষ্টে চলতে হয়।
যদিও একটি প্রতিষ্ঠানের কোয়ালিটি কন্ট্রোলার মিঠুন সরদারের দাবি, প্রতি বছর নিয়ম মেনে বেতন বাড়ানো হচ্ছে। একই সুরে কথা বলেন ইপিজেডের জেনারেল ম্যানেজার আনিসুর রহমান। তাঁর ভাষ্য, বেপজার নিয়ম অনুসরণ করে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়া হয়। নিয়মের বাইরে কিছু করার নেই। তবে শ্রমিকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর প্রতি নজরদারি রয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠান নিয়ম না মানলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০:০৮:৩০ ● ১২৮ বার পঠিত
পাঠকের মন্তব্য
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)-
প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিয়ে করতে চায় সিলেটের ছেলেমেয়েরা
মঙ্গলবার ● ৫ ডিসেম্বর ২০২৩ -
মধ্যনগরে কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরন
সোমবার ● ৪ ডিসেম্বর ২০২৩ -
এবার ট্রেনে সেবা দিচ্ছে বিমানের মতো ‘ট্রেনবালা’
সোমবার ● ৪ ডিসেম্বর ২০২৩ -
ভূমিকম্পে খসে পড়েছে ঢাবির হলের পলেস্তারা
রবিবার ● ৩ ডিসেম্বর ২০২৩ -
কার বিরহে বিলীন হতে চান প্রভা!
রবিবার ● ৩ ডিসেম্বর ২০২৩ -
মেসি মেসি’ স্লোগান রোনালদোর সামনেই
রবিবার ● ৩ ডিসেম্বর ২০২৩
-
মধ্যনগরে কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরন
সোমবার ● ৪ ডিসেম্বর ২০২৩ -
প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিয়ে করতে চায় সিলেটের ছেলেমেয়েরা
মঙ্গলবার ● ৫ ডিসেম্বর ২০২৩ -
এবার ট্রেনে সেবা দিচ্ছে বিমানের মতো ‘ট্রেনবালা’
সোমবার ● ৪ ডিসেম্বর ২০২৩
আর্কাইভ
Head of Program: Dr. Bongoshia
News Room: +8801996534724, Email: [email protected] , [email protected]