শস্য চুক্তি থেকে বের হলো রাশিয়া; কোটি মানুষকে মূল্য দিতে হবে- গুতেরেস

Home Page » জাতীয় » শস্য চুক্তি থেকে বের হলো রাশিয়া; কোটি মানুষকে মূল্য দিতে হবে- গুতেরেস
মঙ্গলবার ● ১৮ জুলাই ২০২৩


ইউক্রেন এ পর্যন্ত প্রায় তিন কোটি ২০ লাখ টন শস্য এবং অন্যান্য খাবার রপ্তানি করেছে

বঙ্গ-নিউজ: শস্য চুক্তি থেকে রাশিয়ার বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে দুঃখ প্রকাশ করে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, এমনিতেই বিশ্বে রলাখ লাখ মানুষ অনাহারে রয়েছে। এর মধ্যে রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তে বিশ্বের সব প্রান্তের মানুষই ভুক্তভোগী হবে। এর জন্য তাদেরকে মূল্য দিতে হবে। খবর আনাদোলু।

সোমবার (১৭ জুলাই) শস্য চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তা আর না বাড়ানোর ব্যাপারে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় রাশিয়া। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, দুর্ভাগ্যবশত, এই শস্য চুক্তিতে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত যে অংশটি ছিল, তার এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি।

মস্কোর এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আন্তোনিও গুতেরেস নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, রুশ ফেডারেশনের আজকের সিদ্ধান্ত সর্বত্র অভাবী মানুষের ওপর আঘাত হানবে। গত এক বছরে তিন কোটি ২০ লাখ টন শস্য রপ্তানি করেছে ইউক্রেন।

তিনি বলেন, ব্ল্যাক সি ইনিশিয়েটিভ বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তার জন্য একটি লাইফলাইন হিসেবে ছিল। এই চুক্তির কারণে গত বছরের মার্চ থেকে বর্তমানে খাদ্যের দাম ২৩ শতাংশের বেশি কমেছে। তবে এ চুক্তি নবায়ন না করা হলে ক্ষুধার্ত শত কোটি মানুষকে এর মূল্য দিতে হবে।

শস্য চুক্তির মেয়াদ না বাড়ার সিদ্ধান্তে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠনের (ডব্লিউটিও) প্রধানও। এক টুইটে তিনি লেখেন, কৃষ্ণ সাগর দিয়ে খাবার, পশু খাদ্য ও সার বাণিজ্য পুরো বিশ্বে খাবারের দাম স্থিতিশীল রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু রাশিয়ার সাম্প্রতিক এ সিদ্ধান্তে গরিব মানুষ এবং গরিব দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হবে।

গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হলে দেশটি থেকে শস্য রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ শস্য রপ্তানিকারক দেশ ইউক্রেন থেকে এভাবে পণ্য বিশেষ করে খাদ্যপণ্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেলে বিশ্ববাজারে তার সরাসরি প্রভাব পড়ে। খাদ্যশস্যের দাম কয়েক গুণ বেড়ে যায়।

এ অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসে তুরস্ক ও জাতিসংঘ। তাদের মধ্যস্থতায় ইউক্রেন থেকে শস্য রপ্তানির বিষয়ে গত বছরের জুলাইয়ে তিন পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। প্রথমে এর মেয়াদ তিন মাস থাকলেও পরে দফায় দফায় এর মেয়াদ বাড়িয়ে এক বছর ওই চুক্তিটি অব্যাহত থাকে। শস্যচুক্তিটি হওয়ার পর থেকে ইউক্রেন এ পর্যন্ত প্রায় তিন কোটি ২০ লাখ টন শস্য এবং অন্যান্য খাবার রপ্তানি করেছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস

তবে রাশিয়া দাবি করছে, এ চুক্তিতে রাশিয়ার জন্য যেসব বিষয় উল্লেখ ছিল, তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। রাশিয়া এ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রাশিয়ান কৃষি ব্যাংকের সুইফট আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেমে অন্তর্ভুক্তিসহ সার রপ্তানিতে বাধা অপসারণের চেষ্টা করছিল। কিন্তু সে সব ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে অভিযোগ মস্কোর। ফলে গতকাল (১৭ জুলাই) পর্যন্ত মেয়াদ থাকা চুক্তিটি তারা আর নবায়ন করেনি। এতে বিশ্বের খাদ্যবাজার আবারও চরমভাবে অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০:৩৮:২৬ ● ১৪৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ