কিশোর গ্যাংই পরিণতি নয়, কৈশোর অশেষ সম্ভাবনার
Home Page » শিশু-কিশোর » কিশোর গ্যাংই পরিণতি নয়, কৈশোর অশেষ সম্ভাবনার
বছর তিনেক আগে ঢাকার উত্তরায় দুটি কিশোর গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হয় আদনান কবির নামের এক কিশোর। হত্যার প্রস্তুতি পর্বে একটি গ্রুপ ফেসবুকে একই রঙের পোশাক পরে ছবিও দেয়! কারও কারও হাতে ছিল হকিস্টিক। আদনানের মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা পর ফেসবুকে আরেক কিশোর ওই হত্যার বদলা নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছিল। এ ঘটনার পর ‘কিশোর গ্যাং’ বিষয়টি আলোচনায় বেশি আসে।
কিশোর অপরাধ আর কিশোর গ্যাং বিষয়টি একটু আলাদা। একজন কিশোর আইন ভঙ্গ করলে সেটা কিশোর অপরাধ। কিশোরেরা সংঘবদ্ধভাবে আইন অমান্য করে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়লে সেটা কিশোর গ্যাং।
কেন এই কিশোর অপরাধ
সমাজবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী আর মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা কিশোর অপরাধের পেছনে বিভিন্ন কারণের মধ্যে পারিবারিক ও সামাজিক নানা দিকও চিহ্নিত করেছেন। সমাজবিজ্ঞানী সারা সালমানের মতে, পরিবার আর সমাজ যখন শিশু-কিশোরদের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারায়, তখন কিশোর অপরাধের ঘটনা ঘটতে থাকে। তবে শিশু–কিশোরদের ওপর নিয়ন্ত্রণের মাত্রা নিয়েও মতভেদ আছে।
শিশু–কিশোরকালে বিকাশের সমস্যা, সঙ্গী–সাথিদের চাপ, সামাজিক বৈষম্য, নির্যাতনের শিকার হওয়া, দারিদ্র্য, উপযুক্ত শিক্ষার অভাব, পরিবারে অপরাধের উদাহরণ, নেশা, সামাজিক অস্থিরতা এবং মানসিক রোগের (কন্ডাক্ট ডিজঅর্ডার) কারণেই মূলত শিশু–কিশোরেরা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।
মানুষের মনের গঠনে তিনটি উপাদান রয়েছে—ইড (স্বভাবজাত প্রবৃত্তি বা চাহিদা), ইগো (মধ্যবর্তী সত্তা বা অহংবোধ), সুপার ইগো সুপার ইগো (বিবেক বা নৈতিকতাবোধ)। আমাদের সব কামনা–বাসনার চাহিদায় কাজ করে ইড। ইড আমাদের তৃপ্ত করতে চায়; আর সুপার-ইগো চায় নৈতিকতার মধ্যে রাখতে। ডিফেন্স মেকানিজম বা মনের অহংকে রক্ষা করার মাধ্যমে এই দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে ইগো। ইড যাকে পরিচালনা করে তার মধ্যে পাশবিক প্রবৃত্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। নিষ্ঠুরতা আর হিংস্রতার পেছনে থাকে ইডের প্রভাব। বন্ধু যখন বন্ধুকে আক্রমণ করে, তখন তার সুপার ইগো বা বিবেক পরাজিত। সে তখন মানবিক গুণাবলি হারাতে থাকে। কে কীভাবে ইগোকে বশে রাখবে, তা নির্ভর করে শৈশবের বিকাশ, পারিবারিক পরিবেশ, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং তার সমাজ ও সংস্কৃতির ভৌত কাঠামোর ওপর।
শিশুর জ্ঞানীয় ও নৈতিক বিকাশের পর্যায়গুলো অস্বাভাবিক হলে তার মধ্যে হিংস্রতা ও নিষ্ঠুরতা দেখা দিতে পারে। মানুষের নৈতিক বিকাশের পর্যায় ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মার্কিন গবেষক লরেন্স কোহলবার্গ তিনটি স্তরের বর্ণনা দেন। জন্ম থেকে প্রথম কয়েক বছর শাস্তি এড়াতে শিশুরা নিয়মকানুন মেনে চলে। বয়ঃসন্ধিতে এসে তারা নিজেদের কাজের স্বীকৃতির জন্য সামাজিক রীতিনীতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে ‘ভালো ছেলে’ বা ‘ভালো মেয়ে’ অভিধায় ভূষিত হতে চায়। নৈতিকতার বিকাশের তৃতীয় স্তর শুরু হয় ১৬-১৭ বছর বয়সের দিকে। তখন তারা নৈতিকতাকে নিজস্ব ধারণার জগতের সঙ্গে মিলিয়ে ব্যাখ্যা দিতে থাকে। তার ধারণার জগতে যদি সে বিশ্বাস করে এই সমাজ ও প্রচলিত রীতিনীতি ‘সঠিক নয়’, তখন চারপাশকে পরিবর্তন করতে চায়। কিশোর-তরুণের মন তখন নিষ্ঠুরতা আর উগ্রতায় মোড় নেয়। নিষ্ঠুরতাকে যৌক্তিক মনে করে। অনেকে অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।
হতাশা থেকে আগ্রাসী হয়ে ওঠার তত্ত্ব (ফ্রাসট্রেশন অ্যাগ্রেশন হাইপোথিসিস) অনুযায়ী শিশু–কিশোরেরা হতাশাগ্রস্ত হয়েও আগ্রাসী আচরণ করতে পারে। বেড়ে ওঠার সময় শিশু নিজেকে কোনো কারণে সামাজিক বৈষম্যের শিকার বলে ভাবলেও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে যেতে পারে। সঙ্গীদের সঙ্গে তাল না মিলিয়ে দলছুট হয়ে যাওয়ার ভয়ে অনেকে অপরাধে যুক্ত হয়। পরিবারের কোনো সদস্যের অপরাধে সম্পৃক্ততা থাকলে কিশোর সদস্যদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা দেখা দিতে পারে। মাদকাসক্তি এবং শিশু-কিশোরদের আচরণজনিত মানসিক সমস্যার (কন্ডাক্ট ডিজঅর্ডার) কারণেও কিশোর অপরাধ ঘটতে পারে।
আচরণজনিত মানসিক সমস্যা থাকা শিশুরা সাধারণত অবাধ্য বা বেয়াদব বলে চিহ্নিত হয়। তারা মিথ্যা বলে, চুরি করে, বিবাদে জড়ায়, উত্ত্যক্ত করে, নিয়ম ভাঙে, অপরাধ করে, স্কুল পালায়, নেশা করে, অনেকে কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িয়ে যায়। কনডাক্ট ডিজঅর্ডার থেকে হত্যার মতো অপরাধও ঘটে যায়। এখানে বিষয়টিকে রোগ বলে ভাবা হয় না, কিন্তু এটি বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত শিশু-কিশোরদের একটি মানসিক রোগ।
প্রযুক্তি আর প্রচারমাধ্যমের প্রভাবেও হিংস্রতা দেখা দেয়। আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন দুই বছর বয়সের নিচের শিশুদের টিভি না দেখার পরামর্শ দিয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব গেমে আক্রমণ ও প্রতি-আক্রমণ করতে হয়, তা শিশু-কিশোরদের মধ্যে হিংস্রতা তৈরি করে। উত্তেজক ওয়েবসাইট থেকেও কিশোরদের মধ্যে হিংস্রতা জন্ম নিতে পারে।
কিশোর অপরাধ: দেশের চিত্র
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি, মা-বাবাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেলেই কেবল সন্তানদের মনোরোগ চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে আসেন। চিকিৎসা দিতে গিয়ে দেখেছি, এক কিশোর বছর কয়েক ধরে স্কুলে পুরোনো চোরাই মোবাইল ফোন বিকিকিনির ব্যবসা করত। মা-বাবা জেনেও গুরুত্ব দেননি। কিশোরটি কন্ডাক্ট ডিজঅর্ডারে ভুগছিল। সে পাঁচ–ছয় বছর ধরে অবাধ্য আচরণ করতে থাকলেও তাঁরা বোঝেননি এটি মানসিক সমস্যা। চোরাই মোবাইল ফোন উদ্ধারের সূত্রে পুলিশ কিশোরটিকে আটক করে পরামর্শ দেওয়ার পর তাঁরা সন্তানকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন।
২০১৫ সালের পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাবমতে, বাংলাদেশে গড়ে প্রতিবছর কমপক্ষে দুই হাজার শিশুকে নানা ‘অপরাধে’ আটক করা হয়। কিশোর অপরাধীদের একাংশ গ্যাংয়ের সঙ্গেও জড়িয়ে পড়ছে। পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, কেবল ঢাকাতেই কিশোর গ্যাং আছে ৬০টির বেশি। এর মধ্যে ৩৪টি সক্রিয়।
বাংলাদেশে ২০১৩ সালে প্রণীত শিশু আইন অনুযায়ী, ১৮ বছরের নিচে সবাই শিশু। প্রয়োজনে বিচার হবে শিশু-কিশোর আদালতে। আদালত অপরাধ বিবেচনা করে তাদের শিশু–কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠাবেন। ৯ বছরের কম বয়সী কোনো শিশুকে অপরাধের কারণে আটক বা শায়েস্তা করা যাবে না।
কেমন হচ্ছে শিশু ‘উন্নয়ন’?
অত্যন্ত মহৎ উদ্দেশ্যে দেশে তিনটি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়। এর মধ্যে গাজীপুরে দুটি (একটি বালক ও একটি বালিকা) ও আরেকটি যশোরে। এগুলোতে আগস্টে ৯০২ জন নিবাসী ছিল, যা মোট আসনের দেড় গুণ। তাদের জীবনমান, খাবারদাবার অত্যন্ত নিম্নমানের বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি কিছু ঘটনায় এগুলোর কার্যক্রম আরও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এ বছর আগস্টের প্রথমার্ধে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিনটি কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পিটিয়ে আহত করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আরও ১৫ জনকে। তাদের নৃশংসভাবে পিটিয়েছিলেন শিশুদের তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত কেন্দ্রের ‘কর্মকর্তারা’। খুন করেই ক্ষান্ত হননি, মিথ্যা নাটক সাজিয়ে প্রথমে ঘটনাটিকে কিশোরদের নিজেদের মধ্যকার সংঘর্ষ বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। প্রাথমিক তদন্তের পর পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সবচেয়ে খেদের ব্যাপার হচ্ছে, যশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে আটক পাঁচ কর্মকর্তার একজন ওই কেন্দ্রের ‘সাইকো-সোশ্যাল কাউন্সেলর’, যিনি শিশু–কিশোরদের মনঃসামাজিক উৎকর্ষের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত। প্রাথমিক তদন্তে বলা হয়েছে, তিনিও নাকি এই নৃশংস কাজে অংশ নিয়েছিলেন।
ঘটনা আগেও ঘটেছে। ২০১১ সালে আরেক কিশোরকে মারধর করে পরে হত্যা করা হয়। ২০১৯ সালে এক কিশোর আত্মহত্যা করেছিল বলা হলেও পরিবারের অভিযোগ, তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। (বাংলাট্রিবিউন, আগস্ট ২৩, ২০২০)।
যশোরের ঘটনায় গঠিত একটি তদন্ত কমিটি ১০টি সুপারিশ আর ৯টি পর্যবেক্ষণ দাখিল করে। বিস্তারিত প্রকাশিত হয়নি, কিন্তু এই সুপারিশ থাকা অত্যাবশ্যক যে কিশোর অপরাধীর মানসিক স্বাস্থ্য হবে সবার আগে বিচার্য্য। মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান বা বিশেষজ্ঞের মূল্যায়নের আগে কোনো কিশোরকে তার অপরাধের জন্য আইনে সোপর্দ করা যাবে না। ‘উন্নয়নকেন্দ্র’–এ মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারার মতো যোগ্য পেশাদার নিয়োগ করতে হবে।
সমাধান কোন পথে
১৯২০ সালের সোভিয়েত ইউনিয়ন। গৃহযুদ্ধের শেষ পর্যায়। তরুণ স্কুলশিক্ষক আন্তন মাকারেঙ্কো দায়িত্ব পেলেন কিশোর অপরাধীদের সংশোধন করার। পরিত্যক্ত পথভ্রষ্ট শিশুদের জন্য তৈরি হলো গোর্কি কলোনি। অবাধ্য কিশোর–কিশোরীদের যোগ্য নাগরিক করে তোলাই হয়ে উঠল তাঁর সাধনা। তাঁর উদ্ভাবিত শিক্ষাপদ্ধতিতে গোর্কি কলোনি থেকে বিকশিত হলো বহু রুশ প্রতিভা। এঁদের একজন সের্গেই কারালিয়েভ, প্রতিভাবান রকেট ইঞ্জিনিয়ার, যাঁর ছাত্র পৃথিবীর প্রথম মহাশূন্যচারী ইউরি গ্যাগারিন।
আঠারো শতকের শেষে ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার শহরেও কিশোরদের গ্যাং নগরবাসীর জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। হত্যাকাণ্ডও ঘটছিল তাদের হাতে। অবাধ্য কিশোরদের জন্য ল্যাড’স ক্লাব নামে ফুটবল ক্লাব খোলা হলো। মূলত গ্যাংয়ের কিশোরেরা হলো সদস্য। বছর কয়েক পর ক্লাবের নাম হলো সেন্ট মার্কস ফুটবল ক্লাব, আজ যার বিশ্বব্যাপী পরিচয় ম্যানচেস্টার সিটি ফুটবল ক্লাব। অপরাধ থেকে সমাজের মূলস্রোতে কিশোরদের ফিরিয়ে আনার সেরা উদাহরণ ম্যানচেস্টার সিটি ফুটবল ক্লাব।
কিশোর অপরাধ কমাতে হলে নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টিভঙ্গি আমূল পাল্টাতে হবে। অপরাধী হিসেবে না দেখে শিশু–কিশোরদের কৃতকর্মকে মানসিক স্বাস্থ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা জরুরি। বাংলাদেশে একটি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সংক্ষিপ্ত গবেষণায় দেখা যায়, সেখানে থাকা ৫৭ শতাংশ শিশু-কিশোরের মানসিক সমস্যা রয়েছে, যার প্রায় অর্ধেক কন্ডাক্ট ডিজঅর্ডার। এর জন্য দরকার চিকিৎসা, বন্দিশালার বন্দিত্ব নয়। কন্ডাক্ট ডিজঅর্ডারের জন্য রয়েছে বিশ্বস্বীকৃত মানসিক চিকিৎসার দিকনির্দেশনা। সেখানে এর চিকিৎসায় পরিষ্কারভাবে সাইকিয়াট্রিস্ট, সাইকোলজিস্ট (বিশেষ করে শিশু-কিশোর সাইকিয়াট্রিস্ট আর শিশু-কিশোর সাইকোলজিস্ট) ও সাইকিয়াট্রিক সোশ্যাল ওয়ার্কারদের ভূমিকার উল্লেখ আছে।
শিশু আইনের ৩১ (২) ধারাতেও শিশু–কিশোরদের বিচারপ্রক্রিয়ার অন্যতম বিবেচ্য বিষয় শিশু–কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্য। অথচ আমরা তাদের বিশেষায়িত জেলে পুরে নির্যাতন করছি। মানসিক চিকিৎসার ভাবনা আমাদের চিন্তাধারাতেই অনুপস্থিত।
মানসিক স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার দিয়ে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রগুলো ঢেলে না সাজালে কিছুদিন পর পর যশোরের মতো ঘটনা ঘটতেই থাকবে। আর শিশু–কিশোর মনঃসামাজিক কাউন্সেলর নিয়োগবিধি প্রণয়ন করে উপযুক্ত একাডেমিক যোগ্যতা আর পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণকে নিয়োগের আবশ্যিক পূর্বশর্ত না করতে পারলে সাইকো–সোশ্যাল কাউন্সেলর পদমর্যাদার ব্যক্তিরাই অপরাধে জড়িয়ে পড়বেন। সকালে আড়মোড়া ভেঙে ঘুম থেকে উঠেই যে কেউ যেন নিজেকে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, কাউন্সেলর বা থেরাপিস্ট পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতে না পারে, সে জন্য বিএমডিসি, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট ও বার কাউন্সিলের আদলে স্বতন্ত্র লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ থাকা প্রয়োজন।
সমাজ ও রাষ্ট্রকে যতই দায়িত্ব দিই না কেন, মনে রাখতে হবে সমাজের ক্ষুদ্রতম একক পরিবার। তাই পারিবারিক কাঠামো আরও সুসংহত করা ছাড়া কিশোর অপরাধ কমানো যাবে না। সন্তানকে কেবলই সফলতার ইঁদুরদৌড়ে ঠেলে দেওয়া থেকে বাবা-মায়েদের বেরিয়ে আসতে হবে। পরিবারে নৈতিকতার চর্চা বাড়াতে হবে। শিশুর সঙ্গে বা সামনে নিষ্ঠুর আচরণ থেকে বিরত থাকতে হবে। স্ক্রিনে নৃশংস দৃশ্য শিশুকে দেখানো যাবে না। বড় সময় স্কুলে কাটায় বলে শিশু-কিশোরদের ওপর শিক্ষকের আচরণ গভীর প্রভাব ফেলে। সেখানেও নিষ্ঠুরতা, বিদ্রূপ বা তুলনা পরিহার করতে হবে। সন্তানের মধ্যে অবাধ্য আচরণের লক্ষণ দেখলে দ্রুত মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে।
দেখা গেছে, সংবাদমাধ্যমে কিশোর অপরাধ নিয়ে কিছু এলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর হয়ে উঠে শিশুদের আটক করে তথাকথিত ‘উন্নয়ন কেন্দ্রে’ পাঠিয়ে দেয়। সংবাদমাধ্যমে কিশোরদের ‘ভয়ংকর’ অভিধা দেওয়ার মাধ্যমে কৈশোর সম্পর্কে নেতিবাচক আর ভীতিকর দ্যোতনা তৈরি করা হয়। কিশোরকাল মোটেও ভয়ংকর নয়, বরং সম্ভাবনার সময়। পরিবার, রাষ্ট্র আর সমাজের কাজ সে সম্ভাবনার পথ খুলে দেওয়া। অপরাধী বলে দূরে না সরিয়ে তাদের সংশোধনের জন্য মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিতে হবে, বিজ্ঞানসম্মত আধুনিক পদক্ষেপ নিতে হবে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, চাইল্ড এডোলেসেন্ট অ্যান্ড ফ্যামিলি সাইকিয়াট্রি, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা
বাংলাদেশ সময়: ১৬:২৭:০৬ ● ৯৫ বার পঠিত
পাঠকের মন্তব্য
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)-
আজ প্রধানমন্ত্রী ব্যাংকক থেকে দেশে ফিরছেন
সোমবার ● ২৯ এপ্রিল ২০২৪ -
ফিরছেন নাবিকরা এমভি আবদুল্লাহর মে’র মাঝামাঝি
রবিবার ● ২৮ এপ্রিল ২০২৪ -
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস হবে যেভাবে , নির্দেশনা মানতে হবে
রবিবার ● ২৮ এপ্রিল ২০২৪ -
বিবিআইএন চুক্তিতে যোগ দিতে বাংলাদেশের আহ্বান ভুটানকে
শনিবার ● ২৭ এপ্রিল ২০২৪ -
কিউএস ৪ স্টার পেল এআইইউ বিদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে
শুক্রবার ● ২৬ এপ্রিল ২০২৪ -
আশুলিয়ায় ছাত্রলীগের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত
বৃহস্পতিবার ● ২৫ এপ্রিল ২০২৪ -
সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ কমতে পারবে শেয়ারদর এক দিনে
বৃহস্পতিবার ● ২৫ এপ্রিল ২০২৪ -
থাইল্যান্ডে লাল গালিচা সংবর্ধনা প্রধানমন্ত্রীকে
বৃহস্পতিবার ● ২৫ এপ্রিল ২০২৪ -
আইএমএফ অগ্রাধিকার দেবে চার বিষয়ে
বুধবার ● ২৪ এপ্রিল ২০২৪ -
যেভাবে নিরাপদ সবুজ কারখানার দেশ হয়ে উঠল
বুধবার ● ২৪ এপ্রিল ২০২৪
-
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস হবে যেভাবে , নির্দেশনা মানতে হবে
রবিবার ● ২৮ এপ্রিল ২০২৪ -
ফিরছেন নাবিকরা এমভি আবদুল্লাহর মে’র মাঝামাঝি
রবিবার ● ২৮ এপ্রিল ২০২৪ -
আজ প্রধানমন্ত্রী ব্যাংকক থেকে দেশে ফিরছেন
সোমবার ● ২৯ এপ্রিল ২০২৪
আর্কাইভ
Head of Program: Dr. Bongoshia
News Room: +8801996534724, Email: [email protected] , [email protected]