বঙ্গ নিউজ ডেস্ক: রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা এক লাশের দুই চোখ গায়েব হয়ে গেছে। নিহতের স্বজন ও প্রতিবেশীরা বলছেন, তার দুই চোখ তুলে নেওয়া হতে পারে।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, মর্গে ইঁদুরের অত্যাচার বেড়েছে। লাশের দুই চোখ হয়তো ইঁদুরে খেয়ে ফেলেছে।
মৃত ব্যক্তি হলেন মাসুম মিয়া (৪৫)। তিনি রংপুর মহানগরের বুড়িরহাট বাহারদুর সিংহ গ্রামের বাসিন্দা মৃত নাসিম উদ্দিনের ছেলে। তবে শ্বশুরবাড়ি রংপুর নগরীর বাহাদুর সিংহ (ডনের মিল) এলাকায় থাকতেন তিনি। গত মঙ্গলবার শ্যালকের সঙ্গে ধান কাটা নিয়ে বিরোধের জেরে তিনি হত্যার শিকার হন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে ধান কাটাকে কেন্দ্র করে মাসুম আলীর সঙ্গে তার শ্যালক সায়েদুর রহমানের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শ্যালক সায়েদুরের লোকজন মাসুম আলী, তার স্ত্রী খাদিজা বেগম ও মেয়ে মরিয়ম খাতুনকে দেশি অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। আহত মাসুম আলীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় নিহতের মেয়ে মারুফা বেগম বাদী হয়ে সায়েদুরসহ তিনজনকে আসামি করে রংপুর মহানগর পরশুরাম থানায় হত্যা মামলা করেন।
মঙ্গলবার হাসপাতালে পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করার পরে ময়নাতদন্তের মর্গে রেখে দেয়। ওইদিন ময়নাতদন্ত হয়নি। বুধবার সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গ থেকে বের করা হলে দেখা যায়, লাশের দুটি চোখ নেই। এ নিয়ে আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে হাসপাতালজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
নিহতের প্রতিবেশী আনসার আলী ও আব্দুল জলিল বলেন, হাসপাতালেও লাশ নিরাপদ নয়। লাশের চোখ গায়েব হওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক।
এ বিষয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি বাইরে আছি। উপ-পরিচালকের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন।’
উপ-পরিচালকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে সর্দার রুমের এক কর্মকর্তা বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, হাসপাতালের মর্গের অবস্থা খুব খারাপ। ইঁদুরের উৎপাত বেড়েছে। লাশের চোখ ইঁদুরে খেয়ে ফেলতে পারে।
একই ধরনের কথা বলেন, হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মানিক ইসলাম। তিনি জানান, মর্গে ইদানীং ইঁদুরের অত্যাচার বেড়েছে। প্রায়ই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।
পরশুরাম থানার ওসি মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে সকালে লাশ দেখতে মর্গে গিয়েছিলাম। তখন মাসুমের চোখ ছিল না। দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।’ আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।