
বঙ্গ নিউজ:আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন (সত্য ও পুনর্মিলন) কমিশন কাজ শুরু করেছে। এ রকম কমিশন শ্রীলঙ্কা, নেপালে হলেও ততটা সফল হয়নি। তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় যখন হয়েছিল, তখন সারা পৃথিবীতে সাড়া ফেলেছিল। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে জাতিসংঘের গুম সম্পর্কিত কার্যনির্বাহী দলের (ওয়ার্কিং গ্রুপ) সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনের চারটি অংশ থাকে। এর একটা ট্রুথ সিকিং– আসলে কী হয়েছিল সেটা। সেটার কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি কিছুদিন আগে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করল, সেটা এটার একটা অংশ। আমাদের ট্রাইব্যুনালে যে বিচার হচ্ছে, তদন্ত হচ্ছে, সেটা ট্রুথ সিকিংয়ের একটা অংশ। আমাদের সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী সাবেক গণভবনে যে জুলাই জাদুঘর করছেন, সেটা ট্রুথ সিকিংয়ের একটা অংশ।
এরপরের একটা অংশ হচ্ছে মেমোরিয়ালাইজেশন; স্মৃতিটাকে ধরে রাখা। সেটা ফারুকীর জাদুঘরের মাধ্যমে নিশ্চয়ই করা হবে। আর তৃতীয়টি হচ্ছে অ্যামনেস্টি, এটা একটু কঠিন। এটা হচ্ছে যারা ছোট ছোট অপরাধে যুক্ত ছিলেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোনো অপরাধে যুক্ত ছিলেন না, তাদের ক্ষেত্রে কোনো অ্যামনেস্টির সুযোগ আছে কিনা সেটা দেখা। সব দেশেই এটা করা হয়। চতুর্থ ধাপটি হচ্ছে, রিকনসিলিয়েশন। যারা চরম দোষী, তাদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার মাধ্যমে আমাদের একটা জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলা। এ ছাড়া যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের যথেষ্ট পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেওয়া। ক্ষতিপূরণ শুধু টাকার অঙ্কে না। যেমন জুলাই আন্দোলনে যাদের অঙ্গহানি হয়েছে, তাদের চাকরির ব্যবস্থা করা।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিলাম। সেখানে অনেক বৈঠক করেছি। আমাদের দ্বিতীয় ধাপে চিন্তা আছে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আঞ্চলিক সম্মেলন করা। শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও দক্ষিণ আফ্রিকার যারা বিশেষজ্ঞ আছেন, তাদের সেখানে আনা হবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল, সিভিল সোসাইটি, মানবাধিকার গ্রুপ, ছাত্র সমাজ– সবার মত নিয়ে কী করা যায়, সেটি নিয়ে চিন্তা করা হবে।