অভিযোগ; মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার ৩৬ বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত

Home Page » জাতীয় » অভিযোগ; মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার ৩৬ বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত
শনিবার ● ৫ জুলাই ২০২৫


প্রতীকী ছবি-বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া        বঙ্গনিউজ: মালয়েশিয়ায় সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশিদের একটি দল সিরিয়া ও বাংলাদেশে সক্রিয় জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জন্য তহবিল সংগ্রহ এবং সদস্য নিয়োগের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। গতকাল মালয়েশিয়ার পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে। জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে ‘গেরাকান মিলিটান র‍্যাডিক্যাল বাংলাদেশ (জিএমআরবি)’ নামে পরিচিত এই গোষ্ঠীর ৩৬ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) তান শ্রী মোহাম্মদ খালিদ ইসমাইল জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ২৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ৩৬ জন সন্দেহভাজনের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির অধীনে অভিযোগ আনা হয়েছে। বাকিদের মধ্যে ১৬ জনকে নিরাপত্তা অপরাধ (বিশেষ ব্যবস্থা) আইন-২০১২ (এসওএসএমএ) এর আওতায় আটক রাখা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আরও তদন্ত চলবে।

তিনি আরও জানান, দলটির সদস্যদের বছরে ৫০০ রিংগিত চাঁদা দিতে হতো। এছাড়া সদস্যদের আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী বিভিন্ন সময়ে স্বেচ্ছায় দেওয়া অনুদানের মাধ্যমেও তহবিল সংগ্রহ করা হতো। সংগৃহীত অর্থ ই-ওয়ালেট এবং আন্তর্জাতিক অর্থ স্থানান্তর পরিষেবার মাধ্যমে বিদেশে পাঠানো হতো। নতুন সদস্য সংগ্রহের জন্য দলটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামের মতো বার্তা বিনিময়ের অ্যাপ ব্যবহার করত।

আইজিপি বলেন, ‘সিরিয়া ও বাংলাদেশে আইএস নেটওয়ার্কের জন্য এই গোষ্ঠী ঠিক কী পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেছে, পুলিশ তা তদন্ত করে দেখছে। তারা আইএসের প্রচার, বাইয়াত বা আনুগত্যের শপথ পরিচালনা এবং ধর্মীয় আলোচনা ও গোপন বৈঠকের মতো কার্যক্রম আয়োজনের জন্যও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করত।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত তদন্তে কোনো মালয়েশীয় নাগরিকের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, গোষ্ঠীটি মালয়েশিয়ায় প্রায় এক বছর ধরে সক্রিয় ছিল। যদিও তারা মালয়েশিয়ায় সরাসরি হামলার পরিকল্পনা করছিল না, কিন্তু তহবিল সংগ্রহ এবং সদস্য নিয়োগের জন্য দেশটিকে একটি ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছিল।’

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মালয়েশিয়ার আইপি ঠিকানা ব্যবহার করে বাংলাদেশি নাগরিকদের পরিচালিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কয়েকটি অ্যাকাউন্ট নজরে আসার পর এই গোষ্ঠীর কার্যকলাপ সম্পর্কে প্রথম জানা যায়। গত ২৮ এপ্রিল প্রথম অভিযানে সেলাঙ্গর থেকে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং জোহর-ভিত্তিক জিএমআরবি চক্রটির তথ্য উদঘাটিত হয়। এরপর ৭ মে দ্বিতীয় অভিযানে জোহর থেকে দলটির নেতাসহ আরও ১৪ জনকে এবং ১৯ থেকে ২১ জুন পর্যন্ত তৃতীয় ও শেষ ধাপের অভিযানে আরও ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় পরিচালিত জিএমআরবি-এর প্রধান নেটওয়ার্কটি কার্যকরভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে দাবি করেন আইজিপি।

মালয়েশিয়ার সংবাদ সংস্থা বারনামার প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই দলটির সদস্য সংখ্যা ছিল ১০০ থেকে ১৫০ জনের মধ্যে, যাদের সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। তারা মালয়েশিয়ায় কারখানা, নির্মাণাধীন ভবন এবং পেট্রোল পাম্পের মতো শ্রমঘন খাতে কর্মরত ছিল।

এদিকে, বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার ৩৬ জন বাংলাদেশির বিষয়ে আমরা সে দেশের সরকারের কাছে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছি। আমরা এখন তাদের উত্তরের অপেক্ষায় আছি।’

বাংলাদেশ সময়: ৭:৫৬:৫০ ● ৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ