ঢাকা ও দিল্লির উত্তেজনা দুই দেশ হাইকমিশনার তলব করেছে

Home Page » জাতীয় » ঢাকা ও দিল্লির উত্তেজনা দুই দেশ হাইকমিশনার তলব করেছে
বুধবার ● ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫


ভারতে সহিংস বিক্ষোভ, কূটনৈতিক সম্পর্ক বিপদে

চলমান কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে হাইকমিশনারদের পাল্টাপাল্টি তলব করেছে ঢাকা ও নয়াদিল্লি। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। পরে বিকেলে দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও বাসভবনের বাইরে সংঘটিত ‘দুঃখজনক ঘটনা’ ও ২২ ডিসেম্বর বিভিন্ন উগ্রপন্থিদের দ্বারা শিলিগুড়িতে বাংলাদেশ ভিসা সেন্টারে ভাঙচুরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানাতে ভারতের হাইকমিশনারকে তলব করা হয়। ভারতে বাংলাদেশের বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনের বাইরে সংঘটিত সহিংস বিক্ষোভের ঘটনায়ও বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশ কূটনৈতিক স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে পরিকল্পিত সহিংসতা বা ভয় দেখানোর এ ধরনের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, এ ধরনের ঘটনা কেবল কূটনৈতিক কর্মীদের নিরাপত্তাকেই বিপন্ন করে না, বরং পারস্পরিক শ্রদ্ধা, শান্তি ও সহনশীলতার মূল্যবোধকেও ক্ষুণ্ন করে। বাংলাদেশ সরকার ভারতের প্রতি এ ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত পরিচালনা, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, ভারতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন ও সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানায়। সরকার আশা করে, ভারত কূটনৈতিক কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা এবং নিরাপত্তা রক্ষার জন্য তার আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতা অনুসারে অবিলম্বে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।

অন্যদিকে, বিকেল ৫টায় বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ সময় বাংলাদেশে থাকা ভারতের হাইকমিশনসহ অন্যান্য স্থাপনা ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি জানায়। দিল্লি একটি অভিযোগ ও আপত্তি সংবলিত পত্র হাইকমিশনারকে দিয়েছে। তবে দিল্লির একটি সূত্র জানায়, এবারের তলব নিয়ে কোনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আসবে না। কারণ, ‘ব্যাক চ্যানেলে’ চেষ্টা চলছে, যাতে সম্পর্ক আর খারাপ না হয়। তাই বিষয়টিতে সংরক্ষিত আচরণ করছে দিল্লি।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ
কলকাতা প্রতিনিধি জানান, ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে আবারও বিক্ষোভ করেছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। গতকাল বিক্ষোভের এক পর্যায়ে তারা হাইকমিশনের কাছে ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশের সঙ্গেও সংঘর্ষে জড়ায়।

উগ্রপন্থি সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং বজরং দল এ বিক্ষোভের ডাক দেয়। বিক্ষোভ সামনে রেখে সকাল থেকেই নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রাঙ্গণ ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। ঘেরা হয় তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয়ে। কয়েক দিকে ব্যারিকেড বসানো হয়। মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য। তবে বেলা গড়াতেই উত্তেজনা ছড়ায় হাইকমিশনের বাইরে। হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন হিন্দুত্ববাদীরা।

কলকাতায় উপহাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ, ধস্তাধস্তি
নয়াদিল্লির পর কলকাতায়ও বিক্ষোভ করে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। দুপুরে কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভাঙলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে লাঠিপেটার ঘটনা ঘটে।

কলকাতায় বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চ। কর্মসূচি ঘিরে আগে থেকেই পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছিল। তৈরি করা হয়েছিল কয়েক স্তরের ব্যারিকেড। বিক্ষোভকারীরা তিনটি ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে। এরপর তাদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে তাদের দমনে লাঠিপেটা করে পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগে আটক করা হয় কয়েকজনকে। তাদের প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে সামনে শুয়ে পড়েন কয়েকজন।

শেখ হাসিনাকে ফেরতে যুক্তরাষ্ট্রের সিগন্যালের অপেক্ষায়: সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক
বামদের বিক্ষোভ থেকে সিপিআইএমের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম দাবি করেন, শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সিগন্যালের জন্য অপেক্ষা করছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যাবেন কি, থাকবেন– সেটা মোদি সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। এ ব্যাপারে তারা এখনও কেন চুপ রয়েছে? আগে মোদি বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলতেন, কিন্তু এখন বলছেন না। কেননা, ওয়াশিংটন বারণ করেছে। আসলে হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত সরকার যুক্তরাষ্ট্রে সিগন্যালের জন্য অপেক্ষা করছে।

সংবাদটির ভিডিও নিচে দেখুন:

বাংলাদেশ সময়: ১০:৪৪:১৯ ● ১৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ