সীমান্ত ভ্রমণের সাতটি দিন ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা ; পর্ব- ৫৪:স্বপন চক্রবর্তী

Home Page » সাহিত্য » সীমান্ত ভ্রমণের সাতটি দিন ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা ; পর্ব- ৫৪:স্বপন চক্রবর্তী
মঙ্গলবার ● ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩


ফাইল ছবি-কাজী নজরুল ইসলাম

নজরূল -জীবনের শেষ অধ্যায় - অন্তহীন দুঃখ-কষ্টেরই এক আখ্যান-২

সেই সময়ের মন্ত্রীসভার অন্যতম সদস্য ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মূখার্জী । তার উপর দায়িত্ব অর্পণ করে হক সাহেব কোন রকমে নিজের দায়িত্বটুকু এড়ালেন। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মূখার্জী সেই দিনই কবিকে স্বয়ং দেখতে আসেন এবং কবির ইচ্ছে অনুসারে তিনি সেই দিনই রাতের গাড়িতে হাওয়া বদলের জন্য মধুপুরে যাবার ব্যবস্থা করলেন। কবি মধুপুরে ছিলেন দু’মাস ৪ দিন। সেখানে ডাক্তার ডি এল সরকারের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা চললো। কিন্তু কোন সাফল্য আসলো না। ইতিমধ্যে সংবাপত্রে কবির অসুস্থতার খবর আরও একবার ছাপা হলো। কিন্তু কেউই তাঁকে দেখতে আসলেন না। কারও কাছ থেকে কোন সাহায্য পাওয়া গেলো না।
এবার ঠিক হলো কবির এলোপ্যাথি চিকিৎসা করা হবে। কিন্তু তার জন্যও তো টাকার দরকার। টাকার সংস্থান করবে কে? টাকার জন্য ঘুরাঘুরি করতে যে অভিজ্ঞতা হলো তাও ছিল মর্মান্তিক। জনাব ফজলুল হকের কাছে পুনর্বার সাহায্য প্রার্থনা করা হলো। কিন্তু পাওয়া গেলো নিষ্ফল উপদেশ। জনাব নাজিম উদ্দিন শুনে বললেন, অসুখ হয়েছে ডাক্তার দেখান, আল্লাহ ভালো করবেন। সোহরাওয়ার্দী বললেন, নবযুগের সম্পাদক কাজী নজরুল ইসলামের অসুখ কিংবা আর্থিক অবস্থা সে জন্য আমার কাছে কেন ? তোমাদের ফজলুল হক তো রয়েছে। তার কাছে যাও। জনাব শফিকুল ইসলাম তখন তিনি ছাত্র ছাত্র। বলে উঠলেন , নজরুলের অসুখ, এখানে কেন ? মুসলিম সমাজের স্বার্থের বিরুদ্ধে যে নবযুগে লিখছে, সেই কবিকে মুসলমান কেন সাহায্য করতে যাবে ? এসব কথা বললে সত্যি বাকরুদ্ধ হয়ে যেতে হয়। কোলকাতার এক শ্রেণির মুসলমান বুদ্ধিজীবীরা কবি কাজী নজরুল ইসলামকে যে দৃষ্টি ভঙ্গিতে সে সময় বিচার করেছিলেন, কবির ঘোর দুর্দিনে তারা যে মনোভাব প্রকাশ করেছিলেন তা সত্যি সত্যি নিন্দারও অযোগ্য। আমার মনে হয় আজকের প্রজন্মের সেই ইতিহাস জানা দরকার। জানা দরকার এই কারণে যে ভবিষ্যতে যেন কোন প্রতিভার প্রতি এরকম অবিচার না হয়। ( চলবে )

বাংলাদেশ সময়: ১৯:২৯:৪৩ ● ৩৪৫ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ