ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন থেকে পদত্যাগ করেছেন ইলন মাস্ক

Home Page » জাতীয় » ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন থেকে পদত্যাগ করেছেন ইলন মাস্ক
শুক্রবার ● ৩০ মে ২০২৫


ইলন মাস্ক

বঙ্গনিউজ: ধনকুবের ইলন মাস্ক ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন থেকে পদত্যাগ করেছেন। প্রশাসনের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধের জেরেই তার এই আকস্মিক প্রস্থান বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, হোয়াইট হাউস তার দায়িত্ব পালনের জন্য মাস্ককে ধন্যবাদ জানিয়েছে।

প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা তার পরিষেবার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (ডিওজিই) উদ্যোগে দায়িত্ব পেয়ে রাষ্ট্রের অপচয়, জালিয়াতি ও অপব্যবহার কমানোর প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।’

ট্রাম্পের এই ডিওজিই উদ্যোগটির মূল লক্ষ্য ছিল তথ্য প্রযুক্তির আধুনিকীকরণ, সরকারি কাজের উৎপাদনশীলতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং রাষ্ট্রের অর্থ অপচয় কমানো। এই বিশেষ উদ্যোগের অধীনেই সরকারি চাকরিতে কর্মীসংখ্যা কমানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজও হাতে নেওয়া হয়েছিল।

জানা যায়, ইলন মাস্ক বেশ কয়েকবার মার্কিন বাজেট এবং ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু নীতি নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছিলেন। তার সমালোচনার কারণে খোদ ট্রাম্প কয়েকটি বিল নিয়ে পুনরায় আলোচনা করার কথাও জানিয়েছিলেন, তবে মাস্কের কর্মকাণ্ডে তিনি যে অসন্তুষ্ট, সে কথাও বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ পেয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাস্ক কয়েকটি সরকারি সংস্থার কার্যক্রমে আমূল পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছিলেন। তবে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়ার আগেই তিনি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন। বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে মাস্ক নিজেই জানান যে তিনি হোয়াইট হাউস ছাড়তে চলেছেন। তার এই দ্রুত প্রস্থানে হোয়াইট হাউসে কিছুটা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

মাস্কের এই প্রস্থানের বিষয়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক আলাপ-আলোচনা হয়নি। তবে হোয়াইট হাউসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের মধ্যে তার ব্যাপারে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

সর্বশেষ মাস্ক ট্রাম্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্যাক্স বিলের কঠোর সমালোচনা করেন এবং এর একদিন পরই পদত্যাগের ঘোষণা দেন। বিলটিকে মাস্ক অত্যন্ত ব্যয়বহুল হিসেবে উল্লেখ করে এটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতি ডেকে আনবে বলেও সতর্কতা দিয়েছিলেন। মাস্কের এমন মন্তব্যে হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ স্টিফেন মিলারসহ কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বেশ বিরক্ত হয়েছিলেন। পরে তারা রিপাবলিকান সিনেটরদের ডেকে বিলটির প্রতি ট্রাম্পের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করতে একপ্রকার বাধ্য হয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ২০ জানুয়ারি ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পর, ধনকুবের মাস্ক মার্কিন প্রশাসনে একজন শক্তিশালী ও প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে আবির্ভূত হন। পরবর্তীতে ফেব্রুয়ারিতে কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্সে তাকে একটি লাল ধাতব চেইন উঁচিয়ে উল্লাস প্রকাশ করতেও দেখা গিয়েছিল।

পদত্যাগের সময় টেসলার প্রধান নির্বাহী মাস্ক ইঙ্গিত দেন যে, তিনি ট্রাম্প প্রশাসন ও ডিওজিইতে তার ভূমিকা ছেড়ে দিচ্ছেন। মূলত, ডিওজিই উদ্যোগে মাস্ক তার কাজের পরিধি নিয়ে কিছু আইনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন এবং প্রকল্পটি আশানুরূপভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে না পারায় তিনি সমালোচনার শিকার হচ্ছিলেন।

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, মন্ত্রিসভার কিছু সদস্য যারা প্রাথমিকভাবে মাস্ককে সমর্থন করেছিলেন, তারাও পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেন। তারা মাস্কের গৃহীত কৌশল সম্পর্কে ক্রমশ সন্দিহান ও সতর্ক হয়ে ওঠেন। এমনকি, মন্ত্রিসভার তিনজন জ্যেষ্ঠ সদস্য – পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, পরিবহন সচিব শন ডাফি এবং অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের সঙ্গেও মাস্কের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তর্ক হয়েছিল বলে জানা গেছে।

সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি, গার্ডিয়ান

বাংলাদেশ সময়: ২০:৩৩:৪৯ ● ৪৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ