
বঙ্গ নিউজ ডেস্ক: আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) পরিচালিত ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ গাজায় ভিড়তে দেয়নি ইসরায়েল। ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের জন্য ইতালি থেকে জাহাজটিতে করে ত্রাণ নিয়ে আসা হচ্ছিল। আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকেই জাহাজটিকে ইসরায়েলের আশদাদ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ওই পোস্টে জাহাজটিকে সেলফি ইয়ট বলে উল্লেখ করেছে ইসরায়েলি মন্ত্রণালয়। তারা লিখেছে, ‘তারকাদের’ বহনকারী ‘সেলফি ইয়ট’–কে নিরাপদে ইসরায়েলের উপকূলের দিকে নিয়ে আসা হচ্ছে।
‘ম্যাডলিন’ জাহাজে মোট ১২ জন মানবাধিকারকর্মী আছেন। তাঁরা হলেন সুইডেনের পরিবেশবিষয়ক আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ফরাসি নাগরিক ও ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য রিমা হাসান, জার্মানির ইয়াসেমিন আচার, ফ্রান্সের ব্যাপতিস্ত আন্দ্রে, ব্রাজিলের থিয়াগো আভিলা, ফ্রান্সের ওমর ফায়াদ, পাস্কাল মৌরিয়েরাস, ইয়ানিস মোহামদি, তুরস্কের সুলাইব ওর্দু, স্পেনের সার্জিও তোরিবিও, নেদারল্যান্ডসের মার্কো ফন রেনেস ও ফ্রান্সের রিভা ভিয়া।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই পোস্টে সুইডেনের পরিবেশবিষয়ক আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানানো হয়েছে। এতে অভিযোগ করা হয়, এ মানবাধিকারকর্মীরা গণমাধ্যমকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। শুধু প্রচার পাওয়ার উদ্দেশে তাঁরা এই কাজ করেছেন।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনও (এফএফসি) জাহাজটি ইসরায়েলের দখলে যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে। তারা বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রামে লিখেছে, জাহাজের সঙ্গে তাদের সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এছাড়া টেলিগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে ত্রাণ দিতে যাওয়া মানবাধিকারকর্মীদের হাত ওপরের দিকে তুলে বসে থাকতে দেখা গেছে।
গত ২ মার্চ থেকে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এমন অবস্থায় অনাহারে ভুগে বেশ কয়েকটি শিশু মারা যায়। ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ‘ম্যাডলিন’ নামের এ জাহাজ ১ জুন ইতালির সিসিলির কাতানিয়া শহর থেকে যাত্রা শুরু করে।
বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থার হিসাব অনুসারে, গাজার ২৩ লাখের বেশি বাসিন্দার মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ তীব্রমাত্রায় খাদ্যসংকটে ভুগছেন।
গাজার প্রথম ও একমাত্র নারী মৎস্যশিকারির নামানুসারে ‘ম্যাডলিন’ জাহাজটির নামকরণ করা হয়েছে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, তারা ত্রাণবাহী জাহাজটিকে নিজেদের জলসীমায় প্রবেশ করতে দেবে না।
ফ্রি ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গাজার মানুষের জন্য অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে যেসব সহায়তা দরকার, সেগুলো বহন করছে জাহাজটি। এর মধ্যে আছে চিকিৎসার সরঞ্জাম, ময়দা, চাল, শিশুদের দুধ (বেবি ফর্মুলা), ডায়াপার, নারীদের স্যানিটারি পণ্য, পানি বিশুদ্ধকরণ কিট, ক্রাচ ও শিশুদের কৃত্রিম অঙ্গ।