সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যোগদানের সংখ্যা প্রতি মাসেই কমছে

Home Page » অর্থ ও বানিজ্য » সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যোগদানের সংখ্যা প্রতি মাসেই কমছে
রবিবার ● ১৯ নভেম্বর ২০২৩


সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যোগদানের সংখ্যা প্রতি মাসেই কমছে

বঙ্গনিউজঃ  সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালুর তিন মাস পূর্ণ হয়েছে গত শুক্রবার। প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা নামে চার স্কিমে প্রথম মাসে প্রায় ১৩ হাজার জন নিবন্ধন করে চাঁদা পরিশোধ করলেও দ্বিতীয় মাসে এ সংখ্যা নেমে আসে মাত্র ১ হাজার ৮৩১ জনে। তৃতীয় মাসে তা আরও কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৫৭ জনে। তবে সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষ আশাবাদী, খুব শিগগির গ্রাহকদের ভালো সাড়া মিলবে। কারণ, সরকার এরই মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে এবং আরও কিছু উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার পর্যন্ত তিন মাসে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে মোট ১৫ হাজার ৮৫৪ গ্রাহক ১৬ কোটি ৯ লাখ ৯২ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন। গত ১৭ আগস্ট এ স্কিম উদ্বোধনের পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম এক মাসে চাঁদা পরিশোধ করেন ১২ হাজার ৮৮৯ জন। পরের এক মাসে নতুন করে ১ হাজার ৮৩১ জন যুক্ত হওয়ায় মোট চাঁদাদাতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১৪ হাজার ৭২০। তার পরের মাস, অর্থাৎ ১৭ অক্টোবর থেকে গতকাল পর্যন্ত পেনশন স্কিমে নতুন করে যুক্ত হয়েছেন আরও ১ হাজার ১৫৭ জন। চাঁদাদাতাদের পরিসংখ্যান বলছে, সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যোগদানের সংখ্যা প্রতি মাসেই কমছে।

সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির উদ্বোধনের দিন থেকেই তা সবার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে। প্রথম দিন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে ৮ হাজার মানুষ অনলাইনে নিবন্ধন করলেও পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে চাঁদা দেন ১ হাজার ৭০০ জন। চার শ্রেণির জনগোষ্ঠীর জন্য চার ধরনের পেনশন স্কিম রয়েছে। এগুলো হচ্ছে– বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের জন্য ‘প্রগতি’, স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য ‘সুরক্ষা’, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ‘প্রবাস’ এবং দেশের নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য ‘সমতা’।

পেনশন কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, চার স্কিমের মধ্যে প্রগতিতে ৭ হাজার ২৫ জন ৮ কোটি ৬০ লাখ ৬০ হাজার টাকা, সুরক্ষায় ৬ হাজার ৫৩০ জন ৫ কোটি ৫৪ লাখ ৫৩ হাজার টাকা, প্রবাসে ৪৭৩ জন ১ কোটি ৪১ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং সমতায় ১ হাজার ৮২৩ জন ৪৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা চাঁদা জমা দিয়েছেন।
চাঁদা দিয়ে পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আসতে পারেন ১৮ বছরের বেশি বয়সী যে কেউ। দেশের অন্তত ১০ কোটি মানুষ পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আসবেন– এমন প্রত্যাশা সরকারের রয়েছে। বিশাল এক জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় আনা এবং নিম্ন আয় ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত সমাজের ৮৫ শতাংশ মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই পেনশন স্কিম চালু করা হয়।

দেশের বিপুলসংখ্যক নাগরিক পেনশন কর্মসূচিতে যোগ দেবেন– সরকারের এমন প্রত্যাশা থাকলেও প্রথম তিন মাস পর্যন্ত মানুষের সাড়া আশানুরূপ নয়। তবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা আশা করছেন, মানুষ এই কর্মসূচিতে যোগ দেবেন।

কাঙ্ক্ষিত হারে এ কর্মসূচির আওতায় জনগণ না আসার কারণ জানতে চাইলে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা  বলেন, চাঁদাদাতার তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, প্রবাসীরা কম অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, অনেকেই আগ্রহী হলেও চাঁদা জমা দিতে পারছেন না। কেননা. তাদের ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড নেই। এ সমস্যা দূর করতে যেসব ব্যাংকের মাধ্যমে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) আসে, সেসব ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করার কাজ চলছে। ব্যাংকগুলোর সঙ্গে এমওইউ হয়ে গেলে প্রবাসীদের টাকা জমা দেওয়া সহজ হবে। এতে করে এ স্কিমে গ্রাহক সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, শুরুতে না থাকলেও প্রগতি স্কিমের আওতায় প্রতিষ্ঠানভিত্তিক অংশগ্রহণের সুযোগ ইতোমধ্যে পেনশন কর্তৃপক্ষের সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য এখন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে।

তিনি আরও বলেন, শুরুতে সোনালী ব্যাংক থাকলেও এখন অগ্রণী ব্যাংকও পেনশন স্কিমের সেবা দেওয়ার কাজ করছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর সঙ্গেও এ ব্যাপারে আলোচনা চলছে। ফলে সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে সরকার খুবই আশাবাদী।

বাংলাদেশ সময়: ১৩:৩৬:০৫ ● ৮৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ