মুখ খুললেন ছাত্রলীগ সভাপতি সহসভাপতির অভিযোগ নিয়ে

Home Page » জাতীয় » মুখ খুললেন ছাত্রলীগ সভাপতি সহসভাপতির অভিযোগ নিয়ে
বৃহস্পতিবার ● ২০ জানুয়ারী ২০২২


 ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সহসভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ

বঙ্গনিউজঃ  ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খানের বিরুদ্ধে একসময় ছাত্রদলের হয়ে ধানের শীষে ভোট চাওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন সংগঠনটির সহসভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আল নাহিয়ান বলেছেন, ‘আমি কী, আপনি কী—তা এলাকার সবাই জানে।’

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সমন্বিত হল সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ বর্ধিত সভায় দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন আল নাহিয়ানং

এর আগে ১৫ জানুয়ারি রাতে ফেসবুকে লাইভে এসে আল নাহিয়ান খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন ইয়াজ আল রিয়াদ। তিনি বলেন, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ছাত্রদলের হয়ে ধানের শীষে ভোট চেয়েছিলেন আল নাহিয়ান খান। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির ‘ডামি প্রার্থী’ ছিলেন তাঁর বাবা। এ ছাড়া সাম্প্রতিক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আপন চাচাতো ভাইকে নিজ ক্ষমতাবলে নৌকার বিরুদ্ধে জিতিয়েছেন আল নাহিয়ান।

এসব অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে আল নাহিয়ান খান বলেন, ‘বলতে হবে না, আমি অমুক পরিবারের সন্তান। আমি কী, আপনি কী—তা এলাকার সবাই জানে। আপনারা অনেকেই নামসর্বস্ব জনপ্রিয়তার জন্য বিভিন্ন ধরনের সংগঠনবিরোধী কার্যক্রম করছেন। যদি কেউ মনে করেন যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কারও একটি কথা বা বার্তায় ছাত্রলীগ কলুষিত হবে, তাহলে আপনাদের ধারণা ভুল। সংগঠনের প্রতি যে আপনাদের ভালোবাসা নেই, সেই দৈন্যই আপনারা বারবার প্রকাশ করছেন। আমরা জানি, খালি কলসি বাজে বেশি।’

আল নাহিয়ান খান আরও বলেন, ‘অনেকেই ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করার জন্য অনেক বেফাঁস কথাবার্তা বলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হচ্ছে গুজব সৃষ্টির কারখানা। সেখানে আমাদের সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও সংগঠনের নিয়মের বাইরে গিয়ে বিভিন্ন বেফাঁস মন্তব্য করেন। নেতা-কর্মীদের মনে রাখতে হবে যে দীর্ঘ ধারাবাহিক রাজনীতি করেই প্রতিটি নেতা-কর্মী আজকের অবস্থানে এসেছেন। যুগ যুগ ধরে ষড়যন্ত্র হয়েছে। যাঁরা ছাত্রলীগের জন্য নিবেদিতপ্রাণ, তাঁরা কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের হল কমিটি গঠনে সম্মেলন হচ্ছে ৩০ জানুয়ারি। এ উপলক্ষে বিশেষ বর্ধিত সভায় হলগুলোর শীর্ষ পদপ্রত্যাশীদের উদ্দেশে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘ছাত্রলীগ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে। এই এগিয়ে নেওয়ার পথে যাঁরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন, তাঁদের বিষয়ে আপনারা সজাগ থাকবেন। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা আপনারা আগেই জানাবেন। নেতা হওয়ার পর কারও চরিত্রহনন অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত।

ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো নিয়ে অনেক এজেন্সি কাজ করে, প্রার্থীদের বিষয়ে তারা খোঁজখবর নেয়। সুতরাং কেউ উড়ে এসে এখানে জুড়ে বসেনি।’

হঠাৎ কেন অভিযোগ
আল নাহিয়ান খান ও ইয়াজ আল রিয়াদ একই শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। ক্যাম্পাসে তাঁরা ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি তাঁদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

ইয়াজ আল রিয়াদ  বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুই বছরের মধ্যে ছাত্রলীগের সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও সর্বশেষ সম্মেলনের চার বছর পেরিয়ে গেছে। এ ছাড়া ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি গঠনে অসংগতি ও অনিয়ম হচ্ছে। এসব নিয়ে আমি সামনে থেকেই কথা বলি। তাঁরা (ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা আল নাহিয়ান খান ও লেখক ভট্টাচার্য) মনে করেন, এগুলো তাঁদের ক্ষমতায় থাকাকে বাধাগ্রস্ত করবে। সে জন্য অতিসম্প্রতি আল নাহিয়ানের কিছু অনুসারী আমার নামে অপপ্রচার শুরু করেন যে আমি আওয়ামী পরিবারের সন্তান নই। সেটির জবাব দিতে গিয়েই আমি আল নাহিয়ানের উদাহরণ টেনেছি।’

ইয়াজ আল রিয়াদ আরও বলেন, ‘শুধু আমি নই, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকেই আল নাহিয়ান খানের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগগুলোর ব্যাপারে জানেন। যেহেতু কেউ প্রশ্ন করেননি, তাই আমি এগুলো বলারও প্রয়োজন বোধ করিনি বা বলতেও চাইনি। আমি ছাত্রলীগের বেশ কয়েকটি পদে ছিলাম। এই সময়ে আমাকে কেউ জিজ্ঞাসা করেননি যে আমার পরিবারের রাজনৈতিক ইতিহাস কী? যেহেতু কেউ জিজ্ঞেস করেননি, সেহেতু বলারও দরকার হয়নি। যখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হলো, তখন সেগুলোর জবাব দিতে গিয়ে আমাকে এসব কথা বলতে হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২:১৪:২৩ ● ৮৪৬ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ